অষ্টম শ্রেণির বাংলা ভাব ও কাজ প্রবন্ধের বহুনির্বাচনী
জ্ঞানমূলক ও সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
অধ্যায়:- ২য় ভাব ও কাজ কাজী নজরুল ইসলাম
১। কাজী নজরুল ইসলামের মতে ভাব জিনিসটা কেমন ?
ক. ফুলের সৌরভ খ. প্রকৃতির সৌরভ
গ. পুষ্পবিহীন সৌরভ✔ ঘ. বিশেষ সুগন্ধী
২। ভাবকে রূপ দেয় কে?
ক. ইচ্ছা খ. কাজ✔
গ. শক্তি ঘ. সাহস
৩। ভাব জাগিয়ে তখনই কাজ সম্পন্ন না করলে ভাবাবেগ কী হয়?
ক. কর্পূরের মত উড়ে যায়✔ খ. বাষ্পে মিলিয়ে যায়।
গ. তুলার মত উড়ে যায় ঘ. মেঘে ভেসে বেড়ায়।
৪। ভাবের বাঁশি যিনি বাজাবেন তিনি কেমন হবেন?
ক. ভাববাদী দার্শনিক খ. নিঃস্বার্থ ত্যাগী ঋষি✔
গ. সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী ঘ. ভাবের ঘরের মানুষ
৫। ভাব জাগানোর মূল উদ্দেশ্য কী?
ক. মানব কল্যাণ✔ খ. আত্মপ্রসার
খ.চাকরি লাভ ঘ. পদোন্নতি
৬। মানুষের কোথায় আঘাত করা পাপ?
ক. কোমল অনুভূতিতে✔ খ. মাথায়
গ. হাতে ঘ. পায়ে।
৭। ভাবের তাড়নায় বুঝে না বুঝে আমরা কী করি ?
ক. আত্মার পবিত্রতা রক্ষা করি। খ. আত্মার শক্তিকে অনুভব করি।
গ. আত্মার পবিত্রতা নষ্ট করি।✔ ঘ. আত্মাবিষ্কার করি।
৮। লেখক ভাবের সুরা পান করে কী করতে নিষেধ করেছেন ?
ক. স্মৃতি হারাতে খ. সম্পদ হারাতে
গ. ঠিকানা হারাতে ঘ. জ্ঞান হারাতে।✔
৯। ভাবাবেগে কান্ডজ্ঞান হারালে কিসের পতন হয় ?
ক. কাজের খ. মনুষ্যত্বের✔
গ. ভাবের ঘ. জ্ঞানের
১০। আগে বিবেচনা না করে কাজে নামলে কী হয় ?
ক. ভাব নষ্ট হয় খ. আশা ভঙ্গ হয়
গ. চিন্তা নষ্ট হয় ঘ. উৎসাহ নষ্ট হয়।✔
১১। অন্যের প্ররোচনায় কোনটি নষ্ট করার অধিকার আমাদের নেই?
ক. সম্পদ খ. আত্মার শক্তি✔
গ. শরীর ঘ. সম্পদ
১২। কোন কাজের সফলতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন
i.সঠিক উদ্যোগ
- যথাযথ পরিকল্পনা
iii. কাজের স্পৃহা নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii✔
১৩। উদ্মো ষাড় বলতে কী বোঝায়?
ক. শীর্ণ-ষাড় খ. বন্ধন মুক্ত ষাড়✔
গ. বন্ধন যুক্ত ষাড় ঘ. শক্তিশালী ষাড়
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং ১৪ ও ১৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:- এক মেধাবী বেকার যুবক ইমরান আজ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিবে। বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার পর থেকে কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করেছে। গিয়ে দেখে কর্তৃপক্ষের পরীক্ষা গ্রহণের কোন উদ্যোগ নেই।
১৪। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের কার প্রতিনিধিত্ব করে?
ক. নিঃস্বার্থ ত্যাগী ঋষি খ. দস্তুর মত সাপুড়ে
গ. ঘুম কাতর কুম্ভকর্ণ ঘ. ভাবের বংশীবাদক।✔
১৫। উদ্দীপক এর বিষয়টির সাথে ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের মিলগত দিকটি হলো-
- ভাবের সাথে পরিকল্পিত কর্মশক্তির অভাব।
- বাস্তব উদ্যোগের প্রয়োজন সম্পর্কে অসেচেতন।
iii. মহৎ কাজে শিক্ষিত যুবকদের অনুপ্রেরণা প্রদান। নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii✔ খ. i ও iii
গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii
১৬। কাজী নজরুল ইসলামের রচনাবলি কিসের উজ্জ্বল উদাহরণ?
ক. অসম্প্রদায়িক চেতনা✔ খ. সৌন্দর্য চেতনা
গ. রাজনৈতিক চেতনা ঘ. নান্দনিক চেতনা
১৭। ‘কুহেলিকা’ নজরুল ইসলামের কোন ধরণের গ্রন্থ?
ক. নাটক খ. কাব্য
গ. উপন্যাস✔ ঘ. প্রবন্ধ
১৮। ভাব ও কাজ প্রবন্ধটি পাঠের উদ্দেশ্য কী?
ক. মহৎকাজের জন্য অনুপ্রাণিত করা।✔ খ. ভাব সম্পর্কে ধারণা দান করা।
গ. ভাবের ঘর তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করণ। ঘ. ভাবে সজানো।
১৯। রামায়ণে বর্ণিত রাবনের ছোট ভাইয়ের নাম কী?
ক. মেঘনাদ খ. লক্ষণ
গ. কুম্ভকর্ণ✔ ঘ. রাম
২০। লা-পরোয়া শব্দের অর্থ কী?
ক. গ্রাহ্য করা খ. গ্রাহ্য না করা✔
গ. পরোয়া করা ঘ. বিপাকে পড়া
২১. কাজী নজরুল ইসলাম কত বঙ্গাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
(ক) ১৩০৫ (খ) ১৩০৬✔
(গ) ১৩০৭ (ঘ) ১৩০৮
২২. ‘বিজল‘ কোন ধরনের পত্রিকা?
(ক) দৈনিক (খ) সাপ্তাহিক✔
(গ) পাক্ষিক (ঘ) মাসিক
২৩. সাহিত্যের সকল শাখায় কে উজ্জ্বল পরিচয় দিয়েছেন?
(ক) কাজী নজরুল ইসলাম✔ (খ) গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার
(গ) সিকান্দার আবু জাফর (ঘ) শামসুর রাহমান
২৪. আরবি-ফারসি শব্দ ব্যবহারে কুশলতা দেখিয়েছেন কে?
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (খ) কায়কোবাদ
(গ) কামিনী রায় (ঘ) কাজী নজরুল ইসলাম✔
২৫. ‘রিক্তের বেদন’ কবি নজরুল রচিত কোন ধরনের গ্রন্থ?
(ক) উপন্যাস (খ) কাব্য
(গ) গল্পগ্রন্থ✔ (ঘ) নাটক
২৬. কবি নজরুল কত বছর বয়সে কঠিন রোগে আক্রান্ত হন?
(ক) ৪১ বছর (খ) ৪২ বছর
(গ) ৪৩ বছর✔ (ঘ) ৪৪ বছর
২৭. কী দিয়ে লোককে মাতিয়ে তুলতে হবে?
(ক) চিন্তা (খ) ভাব✔
(গ) কাজ (ঘ) স্পিরিট
২৮. পুষ্পবিহীন সৌরভের মতো কোনটি?
(ক) কাজ (খ) কাজ ও ভাব
(গ) ভাব✔ (ঘ) শক্তি
২৯. ‘ভাব ও কাজ’ রচনায় লেখক ভাবকে কার দাস করতে বলেছেন?
(ক) কার্যের✔ (খ) আত্মার
(গ) কল্যাণের (ঘ) স্বার্থের
৩০. মহৎ কিছু করার জন্য কী প্রয়োজন?
(ক) ভাব (খ) উদ্যোগ ও ভাব
(গ) কাজ (ঘ) ভাব ও কাজ✔
৩১. কীসের কাঠির ছোঁয়া দিয়ে মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হবে?
(ক) সোনার✔ (খ) রূপার
(গ) লোহার (ঘ) পিতলের
৩২. ভাবকে কাজে রূপান্তরিত করতে না পারলে ভাবাবেশ কীসের মতো উড়ে যায়?
(ক) খড় (খ) কর্পূর✔
(গ) স্পিরিট (ঘ) ধুলো
৩৩. কে একনাগাড়ে ছয় মাস ঘুমাত?
(ক) রাবণ (খ) কুম্ভকর্ণ✔
(গ) রাম (ঘ) লক্ষ্মণ
৩৪. ‘পুয়াল’ শব্দের অর্থ কী?
(ক) পেয়ালা (খ) খড়✔
(গ) পেয়ারা (ঘ) পুত্র
৩৫. কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি বলা হয় কেন?
(ক) অবিচার ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য✔ (খ) পরাধীনতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য
(গ) শ্রেণি বৈষম্য দূরীকরণের জন্য (ঘ) অসহায় মানুষের পক্ষে সংগ্রামের জন্য
ভাব ও কাজ গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ১। কোন বিষয় বিবেচনা করে কাজে নামলে উৎসাহ অনর্থক নষ্ট হবে না?
উত্তর : কাজের সম্ভবনা-অসম্ভাবনার কথা আগে বিবেচনা করে কাজে নামলে উৎসাহ অনর্থক নষ্ট হবে না।
প্রশ্ন ২। ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের লেখক ভাবের সঙ্গে বাস্তবধর্মী কর্মে তৎপর হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন কেন?
উত্তর : ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে লেখক ভাবের সঙ্গে বাস্তবধর্মী কর্মে তৎপর হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন দেশের উন্নতি, মুক্তি ও মানুষের কল্যাণের জন্য।
প্রশ্ন ৩। ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে কোনটিকে মহাপাপ’ বলা হয়েছে?
উত্তর : ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে অন্যের প্ররোচনায় নিজের ‘স্পিরিট’ বা আত্মার শক্তি নষ্ট করাকে মহাপাপ বলা হয়েছে।
প্রশ্ন ৪। লোকের কোমল অনুভূতিতে ঘা দেওয়া কী?
উত্তর : লোকের কোমল অনুভূতিতে ঘা দেওয়া পাপ।
প্রশ্ন ৫। পুয়াল’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : ‘পুয়াল’ শব্দের অর্থ খড় ।
প্রশ্ন ৬। “বিদ্রোহী’ কবিতাটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে?
উত্তর : ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি সাপ্তাহিক ‘ বিজলী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
প্রশ্ন ৭। কপূর শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : কপূর শব্দের অর্থ— বৃক্ষরস থেকে তৈরি গন্ধ দ্রব্যবিশেষ যা বাতাসের সংস্পর্শে অল্পক্ষণের মধ্যে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
প্রশ্ন ৮। ভাব ও কাজ’ রচনাটিতে কাজ কোন জগতের?
উত্তর : ‘ভাব ও কাজ’ রচনাটিতে কাজ বস্তুজগতের।
প্রশ্ন ৯। ঢোল, কাসি বাজিয়ে কার ঘুম ভাঙাতে হয়েছিল?
উত্তর : ঢোল, কাঁশি বাজিয়ে কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙাতে হয়েছিল ।
প্রশ্ন ১০। দস্তুরমতো’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : দস্তুরমতো’ শব্দের অর্থ রীতিমতো বা যথেষ্ট।
প্রশ্ন ১১। ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে স্পিরিট শব্দটি কী অর্থে ব্যবহার করা
উত্তর : ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে স্পিরিট শব্দটি ‘আত্মার শক্তির পবিত্রতা অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রশ্ন ১২। ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে লেখক কিসের সুরা পান করতে বলেছেন?
উত্তর : ‘তাব ও কাজ’ প্রবন্ধে লেখক ভাবের সুৱা পান করতে বলেছেন।
প্রশ্ন ১৩। বানভাসি মানে কী?
উত্তর : বানভাসি মানে হচ্ছে- বন্যায় ভাসানো, বন্যায় যা বা যাদের ভাসিয়ে আনে।
প্রশ্ন ১৪। “ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধটি কার লেখা?
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলাম।
প্রশ্ন ১৫। “তাব ও কাজ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত মস্ত বদ-খেয়ালটি কী?
উত্তর : ভাব নিয়ে থাকা এবং লোককে কথায় মাতিয়ে মশগুল রাখা।
প্রশ্ন ১৬। লেখক ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে ভাবাবেশকে কিসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?
উত্তর : লেখক ভাবাবেশকে কপূরের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
প্রশ্ন ১৭। ডাব ও কাজ’ প্রবন্ধে লেখক ভাবের বাশি বাজিয়ে কাকে নাচানাের কথা বলেছেন?
উত্তর : ভাবের বাশি বাজিয়ে জনসাধারণকে নাচানোর কথা বলেছেন।
প্রশ্ন ১৮। ডাব ও কাজ’ প্রবন্ধে কাকে নিঃস্বার্থ ত্যাগী ঋষি হতে বলা হয়েছে?
উত্তর : ভাবের বাঁশিবাদককে।
প্রশ্ন ১৯। সাধারণের সমস্ত উৎসাহ ও প্রাণ কিসের মতো ঢাকা পড়ে?
উত্তর : নতুন বানভাসির পর পলিপড়ার মতো।
প্রশ্ন ২০। ঢোল-কাসি বাজিয়ে কার ঘুম ভাঙানো বিচিত্র নয়?
উত্তর : কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙানো।
প্রশ্ন ২১। “স্পিরিট’ কী?
উত্তর : আত্মার শক্তির পবিত্রতা ।
প্রশ্ন ২২। ভালো উদ্যোগ নষ্ট হয় কীভাবে?
উত্তর : যথাযথ পরিকল্পনা ও কাজের স্পৃহার অভাবে।
প্রশ্ন ২৩। ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে লোকদের কিসের ছোঁয়া দিয়ে জাগানোর কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : সোনার কাঠির ছোঁয়া দিয়ে।
প্রশ্ন ২৪। লেখকের মতে আমাদের আশা-রসাম্বল কে?
উত্তর : যুবকগণ।
প্রশ্ন ২৫। সত্যিকার কর্মীর অভাবে এদেশে মাঝমাঠে কী মারা যায়?
উত্তর : সুবর্ণ সুযোগ।
প্রশ্ন ২৬। বাজে লোকদের কারচুপিতে কারা পুয়াল চাপা পড়ে গেছে?
উত্তর: সত্যিকার দেশকর্মীরা।
প্রশ্ন ২৭। কাজী নজরুল ইসলাম তার সাহিত্য কিসের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ করেন?
উত্তর : অবিচার ও শোষণের বিরুদ্ধে
প্রশ্ন ২৮। ভাবের আবেগে অতিমাত্রায় বিহ্বল হলে কী হয়?
উত্তর : কাঙাকাণ্ড ভালোমন্দে জ্ঞান থাকে না।
ভাব ও কাজ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন-১। ঐতিহ্যবাহী ফুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহানা তার বিদ্যালয়ের সুনাম নিয়ে গর্ব করে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন থাকার ব্যাপারটি তাকে ভীষণ পীড়া দেয়। বিষয়টি শ্রেণিশিক্ষককে জানালে তিনি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজনীয়তার ওপর উদ্দীপনামূলক এক বক্তৃতা করেন এবং ছুটির পর সবাইকে থাকতে বলেন। চরম উত্তেজনা নিয়ে সবাই অপেক্ষা করে, কিন্তু স্যারের দেখা নেই। খোজ নিয়ে জানা গেল— তিনি বাসায় চলে গেছেন। শাহানা মর্মাহত হয় এবং বিষয়টি নিয়ে ভাবতে থাকে। পরদিন পরিকল্পনামাফিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরকে সে কয়েকটি দলে ভাগ করে এবং ছুটির পর পালাক্রমে এক একটি দল শ্রেণিকক্ষটি পরিষ্কার করতে শুরু করে। তারা শ্রেণিকক্ষের দেওয়ালে বিভিন্ন মনীষীর ছবি টানিয়ে দেয়। ফলে শ্রেণিকক্ষটি আকর্ষণীয় ও পাঠের উপযোগী হয়ে ওঠে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শাহানাদেরকে ভীষণ প্রশংসা করেন এবং পুরস্কারের ব্যবস্থা করেন।
ক. ‘দশচক্রে ভগবান ভূত’ কথাটির অর্থ কী?
খ. ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে ‘পুষ্পবিহীন সৌরভ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের শ্রেণিশিক্ষকের মধ্যে ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো
ঘ. “শ্রেণিশিক্ষক নন, শাহানাই কাজী নজরুল ইসলামের কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিত্ব”- ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই করো।
১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক। দশচক্রে ভগবান ভূত’ কথাটির অর্থ— দশজনের চক্রান্তে সাধুও অসাধু প্রতিপন্ন হতে পারে, অর্থাৎ বহুলোকের ষড়যন্ত্রে অসম্ভবও সম্ভব।
খ। ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে ‘পুষ্পবিহীন সৌরভ’ বলতে বোঝানো হয়েছে— ভাব আবেগনির্ভর অবাস্তব উচ্ছ্বাসমাত্র।
মানুষকে জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে ভাবের গুরুত্ব অপরিসীম। তবে তা যদি কাজের সঙ্গে গেঁথে দেওয়া না যায় তাহলে তা মূল্যহীন হয়ে পড়ে। আবার কোনো কাজের জন্য যে যে পরিমাণ ভাব প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি হলেও তা বিফলে যায়। তাই কেবল ভাবে আচ্ছন্ন হলেই চলবে না, তাকে কাজের সঙ্গেও সম্পৃক্ত করতে হবে। আত্মশক্তি অর্জনে ভাব ও কাজের মধ্যে সমন্বয়সাধন অপরিহার্য। অর্থাৎ ভাব হলো এমন জিনিস যা চোখে দেখা যাবে না কিন্তু তার সৌরভ অনুভব করা যাবে। সুতরাং ‘ভাব ও কাজ প্রবন্ধে পুষ্পবিহীন সৌরভ বলতে ভাবের এই আবেগনির্ভর অবাস্তব উচ্ছ্বাসকেই বোঝানো হয়েছে।
গ। উদ্দীপকের শ্রেণিশিক্ষকের মধ্যে ভাবের সাথে কাজের সমন্বয়হীনতার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে লেখকের মতে, ভাব মানুষের জাগরণের উপকরণ। মানুষের মনকে জাগিয়ে তুলতে গেলে ভাবের প্রয়ােজন হয়। আর সেই মানুষকে তার নিজের, পরিবারের, সমাজের, রাষ্ট্রের ও জাতির জন্য যথাযথভাবে গড়ে তুলতে হলে তাকে অবশ্যই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে মানুষকে ভাব দিয়ে জাগিয়ে কর্ম দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই ভাবের সাথে কাজের সমন্বয়সাধন করতে হবে। কাউকে অযথা ভাবে মাতোয়ারা করা যাবে না, কারণ তাতে স্পিরিট নষ্ট হয়। উদ্দীপকের শ্রেণিশিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রতি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজনীয়তার ওপর বক্তৃতা দিয়ে তাদের ভাবে মশগুল করে ফেলে। তাদের মধ্যে যখন কাজ করার জন্য চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে তখন স্কুলশিক্ষকও বাড়ি চলে যায়। এতে এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের মধ্যে ভাব ও কাজের সমন্বয় পরিলক্ষিত হয় না, যা স্পিরিটের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের শ্রেণিশিক্ষকের মধ্যে ভাবের সাথে কাজের সমন্বয়হীনতার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘ। ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম ভাবের সঙ্গে কাজের সমন্বয় সাধনের যে গুরুত্বের কথ বলেছেন তা উদ্দীপকের শাহানার মধ্যে ফুটে ওঠায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম ভাবের উচ্ছ্বাসে উদ্বেল হওয়া নয়, ভাবের সঙ্গে পরিকল্পিত কর্মশক্তি ও বাস্তব উদ্যোগের প্রয়োজন সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। তিনি মনে করেন ভাবের দ্বারা মানুষকে জাগিয়ে তোলা যায়, কিন্তু যথাযথ পরিকল্পনা ও কাজের স্পৃহা ছাড়া যে কোনো ভালো উদ্যোগ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। প্রবন্ধটিতে লেখক দেশের উন্নতি ও মুক্তি এবং মানুষের কল্যাণের জন্য ভারে সঙ্গে বাস্তবধর্মী কর্মে তৎপর হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন।
উদ্দীপকের শাহানা উপলব্ধি করে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখার প্রয়োজনীয়তা। এ বিষয়ে সে শ্রেণিশিক্ষকের সাথে কথা বলে। কিন্তু শ্রেণিশিক্ষক যখন তার বক্তব্য অনুযায়ী কাজ না করে বাড়ি চলে যায় তখন সে মর্মাহত হলেও বিষয়টি নিয়ে নিজের পরিকল্পনামতো কাজ করে শ্রেণিকক্ষের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনে। উপযুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, উদ্দীপকের শাহানা কাজী নজরুল ইসলামের দেখানো পথে চলেছে। অর্থাৎ ভাব ও কাজের সমন্বয় সাধন করেছে। কিন্তু শ্রেণিশিক্ষক সেখানে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। তাই বলা যায়, শ্রেণিশিক্ষক নন, শাহানাই কাজী নজরুল ইসলামের কাক্ষিত ব্যক্তিত্ব’- ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের আলােকে মন্তব্যটি যথার্থ ।
প্রশ্ন ২। কাজ নয়, কথায় আশরাফ হোসেনের জুড়ি মেলা ভার। মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করাই তার কাজ। লোকজন প্রথম প্রথম উৎসাহিত বোধ করলেও কথাসর্বস্ততার জন্য কেউ-ই এখন আর তার ডাকে সাড়া দেয় না।
ক. ‘লা-পরোয়া’ শব্দের অর্থ কী?
খ. দশচক্রে ভগবান ভূত’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের সাদৃশ্যগত দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. আশরাফ হোসেনের ডাকে লোকজনের সাড়া না দেওয়ার কারণ ‘ভাব ও কাজ” প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক। ‘লা- পরোয়া’ শব্দের অর্থ গ্রাহ্য না করা।
খ। দশজনের চক্রান্তে সাধু ব্যক্তিও অসাধু প্রতিপন্ন হতে পারে বোঝাতে প্রাবন্ধিক উক্ত প্রবাদটির ব্যবহার করেছেন।
সমাজের মানুষ হুজুগের বশে অনেক সময়ই ভুলকে সঠিক ভেবে গ্রহণ করে। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে কোনাে ব্যক্তিসমষ্টি সাধু ব্যক্তিকেও অসাধু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। মানুষের হুজুগে স্বভাবের সুযোগ নিয়ে সবাই মিলে অপপ্রচার চালিয়ে সেটিকে তারা বাস্তবরূপও দিতে চায়। অনেকের সম্মিলিত ষড়যন্ত্রে অসম্ভবও সম্ভব হয়— এটিই আলোচ্য উক্তিতে প্রকাশ পেয়েছে।
গ। উদ্দীপকে ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের ভাবগত দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।
মনের চিন্তা ও পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করলে সফল হওয়া যায় । সারাদিন চিন্তা করেও যদি কাজে নামা না যায় তাহলে তা অলীক কল্পনা হিসেবে পরিগণিত হয়। এরূপ লোকের কথা কেউ শোনে।
উদ্দীপকে আশরাফ হোসেনকে দেখা যায় সে কথা সর্বস্ব মানুষ। তার কথার সাথে কাজের মিল নেই। সে তার কথা অনুসারে কাজ করায় মানুষ বিশেষ উপকৃত হয় না। তাই তারা আশরাফের কথায় সাড়া দেয় না। ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধেও বলা হয়েছে যে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ভাবের গুরুত্ব আছে তবে শুধু ভাব দিয়ে মহৎ কাজ হয় না। সুতরাং উদ্দীপকে ভাব সর্বস্ব আশরাফকে দিয়ে কোনাে কাজ হয়নি। এটি প্রমাণ করে যে, উদ্দীপকের মূল বিষয়ের সাথে ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের ভাবগত বিষয়ের সাদৃশ্য আছে।
ঘ। ভাব ও কাজের মধ্যে মিল না থাকায় উদ্দীপকে আশরাফ হোসেনের ডাকে লোকজন সাড়া দেয়নি।
ভাব দিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করলেই মহৎ কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়। এ জন্য কর্মশক্তি ও উদ্যোগের প্রয়োজন। এ দুয়ের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে ভালো উদ্যোগ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
উদ্দীপকে আশরাফ সাহেব সুন্দর কথার মাধ্যমে মানুষকে উৎসাহিত করেছেন। এটি তার একটি প্রশংসনীয় কাজ হলেও এ দ্বারা কোনো মহৎ কাজ পরিপূর্ণ হয়ে যায় না। তাকে কথার সাথে কাজের সমন্বয় ঘটাতে হতো। এটি করতে পারলেই ‘ভাব ও কাজ প্রবন্ধের সম্পূর্ণ বিষয়বস্তু যেমন ফুটে উঠত তেমনি মানুষ উপকৃত হয়ে তার ডাকে সাড়া দিত।
উপযুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, উদ্দীপকে আশরাফের কাজ ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের ভাবসর্বস্ব বিষয় যা বাস্তবধর্মী নয় । এ জন্য আশরাফের ডাকে লোকজন সাড়া দেয়নি।
প্রশ্ন ৩। জনাব ইসলাম বিভিন্ন স্কুল-কলেজে গরবি-দুঃখী ছাত্র-ছাত্রীদের প্রচুর সহায়তা করেন গোপনে। লোক দেখানো কোনো কিছু করাকে তিনি অপছন্দ করেন। অথচ তার পাশের প্রতিবেশী মজিবর শুধু ভাবেন তিনি সহায়তা করবেন কিন্তু তা কার্যে পরিণত করেন না।
ক. কত বছর বয়সে কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য সাধনায় ছেদ ঘটে?
খ. ভাবকে ‘অবাস্তব উচ্ছাস’ বলার কারণ কী?
গ. উদ্দীপকের জনাব ইসলামের কর্মকাণ্ড ভাব ও কাজ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
ঘ. উদ্দীপকের মজিবর ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের কোন দিককে প্রতিনিধত্ব করে? মূল্যায়ন করো।
৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক। তেতাল্লিশ বছর বয়সে কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য সাধনায় ছেদ ঘটে।
খ। মনের কল্পনা থেকে সাময়িক উত্তেজনা প্রকাশ করে বলেই ভাবকে অবাস্তব উচ্ছ্বাস বলা হয়েছে।
মানুষের মন স্বভাবতই কল্পনাপ্রবণ ও স্বপ্নবিলাসী। এই কল্পনা মানুষের মধ্যে সাময়িক একটি প্রণোদনা সৃষ্টি করে। লেখক এই প্রণোদনাকেই বলেছেন ভাব; যা পরিপূর্ণ হয় কাজের মাধ্যমে। কাজ বিহীন ভাবের কোনো বাস্তবিক স্থান নেই। সে কারণে লেখক একে অবাস্তব উচ্ছ্বাস বলেছেন।
গ। ‘ভাব ও কাজ’ নিবন্ধের বক্তব্য অনুসারে উদ্দীপকের জনাব ইসলাম ভাবকে কর্মে রূপ দিতে সমর্থ হয়।
ভাব ছাড়া মানুষের আত্মা জাগে না। কিন্তু ভাবের দাস হয়ে পড়লে মানুষের কর্মশক্তি হারিয়ে যায়। সে কারণে লেখক মানুষকে কর্মের দাস হতে বলেছেন। মনের ভাবকে কর্মের মাধ্যমে সামনে তুলে না ধরলে তার বাস্তবিক কোনো মূল্য থাকে না বলেই লেখক মনে করেন।
উদ্দীপকে জনাব ইসলাম খুব অল্প পরিকল্পনা করেন। কিন্তু যতটুকু তিনি ভাবেন, সবটুকুকেই কর্মে রূপ দেন। অর্থাৎ জনাব ইসলাম ভাব ও কাজের মধ্যে দূরত্ব দূর করে সুন্বয় সাধন করতে পেরেছেন। সে কারণে তাঁর মনের ভাব সম্পূর্ণভাবে কর্মে রূপান্তরিত হয়েছে।
ঘ। উদ্দীপকের মজিবর ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের ভাবের নিয়ন্ত্রণহীনতার দিককে প্রতিনিধিত্ব করে।
কাজী নজরুল ইসলাম ‘ভাব ও কাজ নিবন্ধে মানুষকে লাগামহীনভাবে কল্পনাবিলাসী হতে নিষেধ করেছেন। সেই সাথে সঠিক পরিকল্পনার ওপরও জোর দিয়েছেন। তা না হলে মানুষ লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয় এবং অযাচিতভাবে নিজের শক্তিকে নষ্ট করে।
উদ্দীপকে নজরুলের বক্তব্যের প্রতিফলন ঘটেছে। মজিবর সারাদিন নানা ধরনের কাজের পরিকল্পনা করেও বাস্তবিক প্রয়ােগে অসমর্থ হয়। কিন্তু জনাব ইসলাম খুব অল্প পরিকল্পনা করেও সফলতা লাভ করেন। কারণ তাঁর ভাব ও কর্মের মধ্যে একটা সমন্বয় রয়েছে।
উদ্দিষ্ট আলোচনার শেষে বলা যায়, উদ্দীপকের মজিবর কল্পনাবিলাসী এবং দক্ষ পরিকল্পনা গ্রহণে অপটু। তাই সে নানা পরিকল্পনা করেও সফলভাবে কর্ম সম্পাদন করতে পারে না। এক্ষেত্রে মজিবর তার আত্মার শক্তিকে প্রতিনিয়তই নষ্ট করছে। কারণ ভাবের নিয়ন্ত্রণহীনতা ও অদক্ষ পরিকল্পনা মানুষের আত্মার শক্তি নষ্ট করে। উদ্দীপকের মজিবরের ক্ষেত্রে এমনটি হয়েছে বলেই আমি মনে করি।
প্রশ্ন ৪। আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?
হাতে প্রাণে খাট সবে শক্তি কর দান
তোমরা মানুষ হলে দেশের কল্যাণ।
ক. যিনি ভাবের বাঁশি বাজিয়ে জনসাধারণকে চাবেন তাকে কেমন হতে হবে?
খ. গরমাগরম কার্যসিদ্ধি’ বলতে লেখক বুঝিয়েছেন?
গ. উদ্দীপকে ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকে উল্লিখিত ছেলেটির পণই ‘ভাব ও কাজ প্রবন্ধের লেখকের আহ্বানে ধ্বনিত হয়েছে”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করাে।
৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর
ক। যিনি ভাবের বাঁশি বাজিয়ে জনসাধারণকে নাচাবেন তাকে নিঃস্বার্থ ত্যাগী ঋষি হতে হবে।
খ। গরমাগরম কার্যসিদ্ধি বলতে লেখক তাৎক্ষণিকভাবে কাজ আদায় করে নেওয়াকে বুঝিয়েছেন।
‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে নজরুল ভাব ও কাজে সমান তৎপরতার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছেন। কাজ সম্পাদনের ক্ষেত্রে ভাব আত্মশক্তি হিসেবে কাজ করে, তাই ভাবকে কাজের দাসরূপে নিয়োগ করতে বলেছেন। তাছাড়া শুধু ভাব দিয়ে কাজ আদায় করতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কারণ বিলম্ব হলে সে কাজ পরে আদায় নাও হতে পারে।
গ। উদ্দীপকটি ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে বর্ণিত ভাবকে কাজে পরিণত করার আহ্বানের প্রসঙ্গকে নির্দেশ করে।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে ভাব ও কাজের পারস্পরিক সম্পর্ক তুলে ধরেছেন। মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষেত্রে ভাবের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু কেবল ভাবাবেগকে সম্বল করে জীবনে সাফল্য অর্জন করা যায় না। তাই ভাবাবেগকে নিয়ন্ত্রণে রেখে কর্মে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
উদ্দীপকের কবিতাংশে কবি এমন ছেলের প্রত্যাশা করেছেন, যারা কথার চেয়ে কাজে বেশি বড় হবে। কেননা, কথার মধ্য দিয়ে। সফলতা অর্জন করা যায় না। কাজের সুষ্ঠু প্রয়ােগের মাধ্যমে প্রকৃত সফলতা অর্জিত হয়। ‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জনের জন্য ভাব ও কাজ এ দুয়ের মাঝে যােগসূত্র স্থাপনের কথা বলেছেন। ভাব জিনিসটা অবাস্তব উচ্ছ্বাস হলেও কাজের স্পৃহা সৃষ্টিতে এর দরকার আছে। উদ্দীপকেও কবি, ভাবের চেয়ে কাজে বেশি বড় হতে বলেছেন। অর্থাৎ সেখানে ভাব ও কাজের উপযুক্ত সমন্বয়ের কথা বলেছেন কবি। এতেই প্রকৃত সফলতা নিহিত। আর এটিই উদ্দীপকের সঙ্গে ভাব ও কাজ প্রবন্ধের সাদৃশ্যপূর্ণ দিক
ঘ। “উদ্দীপকের উল্লিখিত ছেলেটির পণই ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধলেখকের আহ্বানে ধ্বনিত হয়েছে”- মন্তব্যটি যথার্থ।
‘ভাব ও কাজ’ প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম কর্মী, ভাবুক ও ত্যাগীর স্বরূপ নির্ণয় করেছেন। ভাবাবিষ্ট ব্যক্তিমাত্রই কর্মী নন, আবার কর্মী মাত্রই ত্যাগী নন। এ তিনের সমন্বয় সাধনের মধ্য দিয়েই একজন আদর্শ মানুষ গড়ে ওঠে বলে লেখক মনে করেন। এ নিবন্ধে তিনি আত্মশক্তিতে বলীয়ান এ কারণে মানুষেরই সন্ধান করেছেন।
উদ্দীপকে এমন এক ছেলের কথা বলা হয়েছে যে কথায় বড় না হয়ে কাজে বড় হবে। অর্থাৎ ভাবাবিষ্ট না হয়ে সত্যিকারের কর্মী হয়ে উঠবে। নজরুল কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষ হওয়ার যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তা ছেলেটির সংকল্পের মধ্য দিয়েই আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে।
উদ্দিষ্ট আলোচনা থেকে দেখা যায় যে, উদ্দীপকের ছেলেটি কর্মের মধ্য দিয়ে একজন আদর্শ মানুষ হয়ে উঠতে চেয়েছে। নজরুল এরকম মানুষেরই সন্ধান করেছেন তাঁর প্রবন্ধে। তাই কর্মী হওয়ার ওপর তিনি অধিক গুরুত্বারোপ করেছেন। উদ্দীপকে বর্ণিত ছেলেটির ভূমিকাও কর্মী হিসেবে। এ বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ।