একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা আমার পথ প্রবন্ধের বহুনির্বচনী
জ্ঞানমূলক ও সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
আমার পথ প্রবন্ধের বহুনির্বচনী প্রশ্ন উত্তর
১. ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’কাজী নজরুল ইসলামের কোন ধরনের রচনা?
ক. উপন্যাস
খ. নাটক
গ. ছোটগল্প
ঘ. প্রবন্ধ
উত্তরঃ ঘ. প্রবন্ধ
২. কাজী নজরুল ইসলাম কত সালে মৃত্যুবরণ করেছেন?
ক. ১৯৭৪
খ. ১৯৭৫
গ. ১৯৭৬
ঘ. ১৯৭৭
উত্তরঃ গ. ১৯৭৬
৩. কাজী নজরুল ইসলাম কোথায় মৃত্যুবরণ করেছেন?
ক. ঢাকায়
খ. কলকাতায়
গ. চট্টগ্রামে
ঘ. বর্ধমানে
উত্তরঃ ক. ঢাকায়
৪. কে প্রাবন্ধিকের পথ দেখাবে?
ক. সত্য
খ. গুরু
গ. পথিক
ঘ. নেতা
উত্তরঃ ক. সত্য
৫. কে মিথ্যাকে ভয় পায়?
ক. যার মন অস্থির
খ. যার মনে মিথ্যা
গ. যে দ্বিধাগ্রস্ত
ঘ. যে কাপুরুষ
উত্তরঃ খ. যার মনে মিথ্যা
৬. কোন বাণীর ভরসা নিয়ে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক নতুন পথে যাত্রা করলেন?
ক. জয় শঙ্কর
খ. জয় ভোলানাথ
গ. মাভৈঃ
ঘ. বন্দে মাতরম
উত্তরঃ গ. মাভৈঃ
৭. প্রাবন্ধিক নতুন পথে যাত্রা করলেন কেন?
ক. যে সমাজে পচন ধরেছে তাকে ভেঙে দিতে
খ. মিথ্যাকে ধ্বংস করতে গ. তরুণদের উৎসাহিত করতে
ঘ. সত্যের বাণীকে পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দিতে
উত্তরঃ ক. যে সমাজে পচন ধরেছে তাকে ভেঙে দিতে
৮. বাংলাদেশের জাতীয় কবি কে?
ক. মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
খ. কাজী নজরুল ইসলাম
গ. শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ঘ. প্রেমেন্দ্র মিত্র
উত্তরঃ খ. কাজী নজরুল ইসলাম
৯. কার আর কাউকে চিনতে বাকি থাকে না?
ক. যে তার সমাজকে চেনে
খ. যে গোটা পৃথিবীটাকেই চেনে
গ. যে শত্রুকে চেনে
ঘ. যে নিজেকে চেনে
উত্তরঃ ঘ. যে নিজেকে চেনে
১০. মানুষ কীভাবে নিজ মনের মধ্যে জোর অনুভব করে?
ক. নিজেকে চেনার মাধ্যমে
খ. পুণ্যের পথকে চেনার মাধ্যমে
গ. মনুষ্যত্ববোধ অর্জনের মাধ্যমে
ঘ. অপরের কল্যাণসাধনের মাধ্যমে
উত্তরঃ ক. নিজেকে চেনার মাধ্যমে
১১. যে ব্যক্তি নিজেকে চিনতে পারে সে কাকে কুর্নিশ করে?
ক. রাজাকে
খ. আপন অস্তিত্বকে
গ. আপন ব্যক্তিত্বকে
ঘ. আপন সত্যকে
উত্তরঃ
১২. কোনটিকে কেউ কেউ ভুল করে অহংকার বলে মনে করে?
ক. নিজেকে সত্যবাদী বলে প্রতিষ্ঠা করা
খ. নিজেকে শ্রেষ্ঠ বলে জাহির করা
গ. সবসময় সত্য কথা বলা
ঘ. নিজের সত্যকে গুরু মনে করা
উত্তরঃ ঘ. নিজের সত্যকে গুরু মনে করা
১৩. কাজী নজরুল ইসলাম কোন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন?
ক. চুরুলিয়া
খ. তাম্বুলখানা
গ. পায়রাবন্দ
ঘ. কাঁঠালতলা
উত্তরঃ ক. চুরুলিয়া
১৪. বাংলা সাহিত্য ও সংগীতকে সমৃদ্ধতর করে তুলতে নিচের কার অবদান সবচেয়ে বেশি?
ক. জীবনানন্দ দাশ
খ. ডি. এল. রায়
গ. কাজী নজরুল ইসলাম
ঘ. বুদ্ধদেব বসু
উত্তরঃ গ. কাজী নজরুল ইসলাম
১৫. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে কোন কবির সমাধিস্থল রয়েছে?
ক. শামসুর রাহমানকে
খ. সুফিয়া কামালকে
গ. কাজী নজরুল ইসলামকে
ঘ. সৈয়দ শামসুল হককে
উত্তরঃ গ. কাজী নজরুল ইসলামকে
১৬. নিচের কোনটি কাজী নজরুল ইসলামের উপন্যাস হিসেবে সমর্থনযোগ্য?
ক. কুহেলিকা
খ. ব্যথার দান
গ. শিউলীমালা
ঘ. রাজবন্দির জবানবন্দি
উত্তরঃ ক. কুহেলিকা
১৭. “আমার যাত্রা শুরুর আগে আমি সালাম জানাচ্ছি নমস্কার করছি আমার সত্যকে।“ আলোচ্য বাক্যে কোন বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে?
ক. সত্যনিষ্ঠতা
খ. ন্যায়পরায়ণতা
গ. অসাম্প্রদায়িক চেতনা
ঘ. নীতিবোধ
উত্তরঃ গ. অসাম্প্রদায়িক চেতনা
১৮. কোন ভয়ে প্রাবন্ধিক ভীত নন বলে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন?
ক. রাজভয়
খ. শত্রুভয়
গ. ভূতের ভয়
ঘ. সমাজের ভয়
উত্তরঃ ক. রাজভয়
১৯. বাইরের ভয় কখন মানুষকে কিছু করতে পারে না?
ক. মিথ্যাকে ধ্বংস করতে পারলে
খ. মিথ্যার সাথে আপোষ করলে
গ. সত্যের পথে অবিচল থাকলে
ঘ. অন্তরের সত্যকে চিনতে পারলে
উত্তরঃ গ. সত্যের পথে অবিচল থাকলে
২০. কে বাইরে ভয় পায়?
ক. যে মিথ্যাকে প্রশ্রয় দেয়
খ. যার ভেতরে ভয়
গ. যার আত্মবিশ্বাস নেই
ঘ. যার সাহস কম
উত্তরঃ খ. যার ভেতরে ভয়
২১. কোনটি মানুষের মাথা নিচু করে ফেলে বলে প্রাবন্ধিক ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন?
ক. খুব বেশি বিনয় প্রকাশ
খ. খুব বেশি অহংকার প্রকাশ
গ. খুব বেশি সহনশীলতা প্রকাশ
ঘ. খুব বেশি নম্রতা প্রকাশ
উত্তরঃ ক. খুব বেশি বিনয় প্রকাশ
২২. কীভাবে নিজের শক্তির ওপর বিশ্বাস আনা যায়?
ক. নিজেকে শ্রেষ্ঠ বলে মানলে
খ. নিজেকে বিশ্বাস করলে
গ. নিজেকে জানলে
ঘ. নিজের মেধাকে কাজে লাগালে
উত্তরঃ গ. নিজেকে জানলে
২৩. কখন নিজের সত্যের ওপর অটুট বিশ্বাস আসে?
ক. সবাইকে ভালোবাসলে
খ. নিজের সত্যকে কর্ণধার মনে জানলে
গ. কাউকে ভয় না পেলে
ঘ. চিত্তের দৃঢ়তা অর্জন করলে
উত্তরঃ খ. নিজের সত্যকে কর্ণধার মনে জানলে
২৪. কে সবাইকে নিজের ওপর বিশ্বাস করতে শিখাচ্ছিলেন বলে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন-
ক. নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু
খ. জওহরলাল নেহেরু
গ. ইন্দিরা গান্ধী
ঘ. মহাত্মা গান্ধী
উত্তরঃ ঘ. মহাত্মা গান্ধী
২৫. কারা বাইরের গোলামি থেকে রেহাই পায় না?
ক. যারা কপট আচরণ করে
খ. যাদের অন্তরে সত্যের স্থান নেই
গ. যাদের অন্তরে গোলামির ভাব
ঘ. যারা আলসেমি করে
উত্তরঃ গ. যাদের অন্তরে গোলামির ভাব
২৬. আত্মাকে চিনলে কীভাবে আত্মনির্ভরতা আসে?
ক. নিজ শক্তিকে জানার মাধ্যমে
খ. নিজ অস্তিত্বকে জানার মাধ্যমে
গ. নিজ ব্যক্তিত্ত্বকে জানার মাধ্যমে
ঘ. নিজ মনকে জানার মাধ্যমে
উত্তরঃ ক. নিজ শক্তিকে জানার মাধ্যমে
২৭. কোনটি না আসা পর্যন্ত আমরা স্বাধীন হতে পারব না?
ক. পর্যাপ্ত অস্ত্র
খ. যোগ্য নেতৃত্ব
গ. বিদেশী সাহায্য
ঘ. আত্মনির্ভরতা
উত্তরঃ ঘ. আত্মনির্ভরতা
২৮. কী লেখকের আগুনকে নেভাতে পারে?
ক. মন্ত্রসিদ্ধ জল
খ. অহংকারের জল
গ. মিথ্যার জল
ঘ. অসত্যের জল
উত্তরঃ গ. মিথ্যার জল
২৯. আমাদের স্বাধীনতা কীভাবে আসবে?
ক. আত্মমর্যাদাসম্পনড়ব হয়ে ওঠার মাধ্যমে
খ. আত্মসচেতন হয়ে ওঠার মাধ্যমে
গ. সংগ্রামী হয়ে ওঠার মাধ্যমে
ঘ. আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার মাধ্যমে
উত্তরঃ ঘ. আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার মাধ্যমে
৩০. নিজে নিষ্ক্রিয় থেকে কাকে প্রাণপণে ভক্তি করলেই দেশ উদ্ধার হয়ে যায় না?
ক. এক অতিমানবকে
খ. একজন মহাপুরুষকে
গ. একজন জননেতাকে
ঘ. একজন বীর যোদ্ধাকে
উত্তরঃ খ. একজন মহাপুরুষকে
৩১. ভারতবর্ষের পরাধীনতার প্রধান কারণরূপে কোনটিকে চিহ্নিত করা যায়?
ক. অজ্ঞানতা
খ. অলসতা
গ. স্বার্থপরতা
ঘ. নিস্ক্রিয়তা
উত্তরঃ ঘ. নিস্ক্রিয়তা
৩২. “তা’ হলে এই তেত্রিশ কোটি দেবতার দেশ এতদিন পরাধীন থাকত না।” কোন প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক একথা বলেছেন?
ক. ভারতবাসীর পরনির্ভরশীলতা প্রসঙ্গে
খ. ভারতবাসীর আত্মপ্রবঞ্চনা প্রসঙ্গে
গ. ভারতবাসীর অজ্ঞতা প্রসঙ্গে
ঘ. ভারতবাসীর অলসতা প্রসঙ্গে
উত্তরঃ ক. ভারতবাসীর পরনির্ভরশীলতা প্রসঙ্গে
৩৩. “তেত্রিশ কোটি দেবতার দেশ” বলতে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে কোন দেশকে বোঝানো হয়েছে?
ক. ভারতবর্ষকে
খ. নেপালকে
গ. শ্রীলঙ্কাকে
ঘ. গ্রিসকে
উত্তরঃ ক. ভারতবর্ষকে
৩৪. মেয়েলি বিনয়ের চেয়ে কী অনেক ভালো বলে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন?
ক. আত্মঅহংকার
খ. অহংকারের পৌরুষ
গ. বিদ্যার গর্ব
ঘ. সত্যের গৌরব
উত্তরঃ খ. অহংকারের পৌরুষ
৩৫. “হেলাল সব সময় তার অফিসের বড় কর্তার সামনে মাথা হেঁট করে থাকে। এমনকি বড়কর্তা তাকে শত অপমান করলেও সে তা গায়ে মাখে না।” ‘আমার পথ’ প্রবন্ধ অনুসারে উদ্দীপকের হেলাল কোনটিকে অস্বীকার করেছে?
ক. ব্যক্তিত্ববোধকে
খ. বিবেকবোধকে
গ. আত্মসম্মানকে
ঘ. আপন সত্যকে
উত্তরঃ ঘ. আপন সত্যকে
৩৬. ‘আমার পথ’ প্রবন্ধ অনুসারে কীভাবে মানুষ ক্রমেই নিজেকে ছোট করে ফেলে?
ক. খুব বেশি বিনয় দেখাতে গিয়ে
খ. খুব বেশি আনুগত্য প্রকাশ করতে গিয়ে
গ. খুব বেশি মহত্ত্ব প্রকাশ করতে গিয়ে
ঘ. খুব বেশি সহানুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে
উত্তরঃ ঘ. খুব বেশি সহানুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে
৩৭. ‘মেয়েলি বিনয়’ বলতে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে কী বোঝানো হয়েছে?
ক. নারীরা যে বিনয় প্রকাশ করে
খ. পুরুষের নারীসুলভ আচরণের প্রকাশ
গ. নিজ সত্যকে অস্বীকার করে যে বিনয় দেখানো হয়
ঘ. নিজ মর্যাদাকে অস্বীকার করে যে বিনয় দেখানো হয়
উত্তরঃ গ. নিজ সত্যকে অস্বীকার করে যে বিনয় দেখানো হয়
৩৮. কোন ধরনের কথা বলায় একটা অবিনয় নিশ্চয় থাকে?
ক. মিথ্যা
খ. স্পষ্ট
গ. অসত্য
ঘ. অস্পষ্ট
উত্তরঃ খ. স্পষ্ট
৩৯. কার স্পষ্ট কথাটাকে কেউ যেন অহংকার বলে ভুল না করে বসেন বলে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন?
ক. মহারথীর
খ. কর্ণধারের
গ. দিকনির্দেশকের
ঘ. অভিশাপরথের সারথির
উত্তরঃ ঘ. অভিশাপরথের সারথির
৪০. কিসে কষ্ট পাওয়াটা দুর্বলতা?
ক. মিথ্যা বলায় যে অবিনয় থাকে তাতে
খ. সত্যের সাথে মিথ্যার বিরোধ
গ. অস্পষ্ট কথা বলায় যে অবিনয় থাকে তাতে
ঘ. স্পষ্ট কথা বলায় যে অবিনয় থাকে তাতে
উত্তরঃ ঘ. স্পষ্ট কথা বলায় যে অবিনয় থাকে তাতে
৪১. কারা অসাধ্যকে সাধন করতে পারে?
ক. যাদের মনে তথাকথিত দম্ভ আছে
খ. যাদের মনে বারুনার ভাব আছে
গ. যাদের হৃদয়ে শিক্ষার আলো আছে
ঘ. যাদের হৃদয়ে শিক্ষার আলো নেই
উত্তরঃ ক. যাদের মনে তথাকথিত দম্ভ আছে
৪২. ‘তথাকথিত দম্ভ’ বলতে কোনটিকে বুঝানো হয়েছে?
ক. ক্ষমতার দম্ভ
খ. অর্থের দম্ভ
গ. আত্মাকে চেনা
ঘ. সম্পদকে চেনা
উত্তরঃ গ. আত্মাকে চেনা
৪৩. ‘আমার পথ’ প্রবন্ধ অনুসারে নিচের কোনটিকে ভণ্ডামি বলা যায় না?
ক. পরিস্থিতির কারণে মিথ্যা বলা
খ. ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সত্য বলতে না পারা
গ. ক্ষমতাবানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা
ঘ. নিজের সত্যকেই ভগবান বলে মানা
উত্তরঃ ঘ. নিজের সত্যকেই ভগবান বলে মানা
৪৪. সে সমাজের ভিত্তি পচে গেছে তাকে একেবারে উপড়ে ফেলতে হবে কেন?
ক. মানুষের শান্তির জন্য
খ. নতুন সমাজ গড়ে তোলার জন্য
গ. নতুন প্রজন্মের ভালোর জন্য
ঘ. সকলের মঙ্গলের জন্য
উত্তরঃ খ. নতুন সমাজ গড়ে তোলার জন্য
৪৫. আত্মার দম্ভতে শির উঁচু করে পুরুষ মনে কিসের ভাব আনে?
ক. ডোন্ট কেয়ার
খ. অভিমান
গ. অহংকার
ঘ. গাম্ভীর্য
উত্তরঃ ক. ডোন্ট কেয়ার
৪৬. যাদের তথাকথিত দম্ভ আছে তারাই কী করতে পারে?
ক. রাজ্য জয়
খ. দেশ রক্ষা
গ. দেশ শাসন
ঘ. অসাধ্য সাধন
উত্তরঃ ঘ. অসাধ্য সাধন
৪৭. প্রাবন্ধিক কীভাবে প্রলয় আনবে?
ক. পচে যাওয়া সমাজকে ধ্বংস করে
খ. পুরাতনকে ধ্বংস করে
গ. মিথ্যাকে ধ্বংস করে
ঘ. সকল অসুন্দরকে ধ্বংস করে
উত্তরঃ ক. পচে যাওয়া সমাজকে ধ্বংস করে
৪৮. নিচের কোনটির জন্য ‘ধুমকেতু’র সারথী দায়ী নয় বলে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন?
ক. প্রলয়
খ. যুদ্ধ
গ. সৃষ্টি
ঘ. অশান্তি
উত্তরঃ ক. প্রলয়
৪৯. “এ দেশের নাড়িতে নাড়িতে অস্থিমজ্জায় যে পচন ধরেছে” আলোচ্য অংশে যে পচনের কথা বলা হয়েছে নিচের কোনটি তার সাক্ষ্য বহন করে?
ক. মিথ্যাচার
খ. ছলচাতুরী
গ. কপটতা
ঘ. গোলামি
উত্তরঃ ঘ. গোলামি
৫০. নতুন জাতি গড়ে তোলা যাবে কীভাবে?
ক. জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিয়ে
খ. পচে যাওয়া সমাজকে ধ্বংস করে
গ. বিকৃত জাতিকে ধ্বংস করে
ঘ. সুস্থ মানসিকতার জাতি গড়ে তোলে
উত্তরঃ খ. পচে যাওয়া সমাজকে ধ্বংস করে
আমার পথ প্রবন্ধের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন-১. কাজী নজরুল ইসলাম কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন-২. বাংলাদেশের জাতীয় কবি কে?
উত্তর : বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
প্রশ্ন-৩. ‘রুদ্রমঙ্গল’ গ্রন্থটির লেখক কে?
উত্তর : ‘রুদ্রমঙ্গল’ গ্রন্থটির লেখক কাজী নজরুল ইসলাম৷
প্রশ্ন-৪. ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
উত্তর : ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি ‘রুদ্র-মঙ্গল’ গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
প্রশ্ন-৫. কাজী নজরুল ইসলাম কোথায় মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলাম ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
প্রশ্ন-৬. কাজী নজরুল ইসলাম সালে কত তারিখে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলাম সালে ১৯৭৬ সালের ২৯শে আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।
প্রশ্ন-৭. কাজী নজরুল ইসলামের কবর কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : কাজী নজরুল ইসলামের কবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে অবস্থিত।
প্রশ্ন-৮. কীভাবে মানুষের মনে আপনা-আপনি একটা জোর আসে?
উত্তর : নিজেকে চিনলে মানুষের মনে আপনা-আপনি একটা জোর আসে।
প্রশ্ন-৯. অতিরিক্ত বিনয় মানুষকে কী করে?
উত্তর : অতিরিক্ত বিনয় মানুষকে ছোট করে।
প্রশ্ন-১০. ‘আমার পথ’ প্রবন্ধ অনুসারে কাকে নিজের ভগবান মনে করা ভণ্ডামি নয়?
উত্তর : ‘আমার পথ’ প্রবন্ধ অনুসারে নিজ আত্মাকে নিজের ভগবান মনে করা ভণ্ডামি নয়।
প্রশ্ন-১১. ‘কুর্নিশ’ শব্দটির অর্থ কি?
উত্তর : ‘কুর্নিশ’ শব্দটির অর্থ অভিবাদন বা সম্মান প্রদর্শন।
প্রশ্ন-১২. কোন দিন আমরা সত্যি সত্যি স্বাধীন হব?
উত্তর : যেদিন আমারা আত্মনির্ভরশীল হতে পারব, সেদিনই আমরা সত্যি সত্যি স্বাধীন হব।
প্রশ্ন-১৩. প্রাবন্ধিক কোন পথকে বিপথ মনে করেন?
উত্তর : প্রাবন্ধিক সত্যের বিরোধী পথকে বিপথ মনে করেন।
প্রশ্ন-১৪. মানুষের মধ্যে সহনশীলতা বাড়ে কখন?
উত্তর : সম্প্রীতির বন্ধন শক্তিশালী হলে মানুষের মধ্যে সহনশীলতা বাড়ে।
প্রশ্ন-১৫. কাজী নজরুল ইসলামের মতে কোনটি আমাদের নিষ্ক্রিয় করে দেয়?
উত্তর : কবি কাজী নজরুল ইসলামের মতে, পরাবলম্বন আমাদের নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
প্রশ্ন-১৬. ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে আমার পথ আমাকে কী দেখাবে?
উত্তর : ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে আমার পথ আমাকে আমার সত্য দেখাবে।
প্রশ্ন-১৭. মিথ্যা, ভণ্ডামি, মেকি দূর করতে কী প্রয়োজন?
উত্তর : মিথ্যা, ভণ্ডামি, মেকি দূর করতে আগুনের ঝান্ডা প্রয়োজন।
প্রশ্ন-১৮. ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিকের মতে, আত্মাকে চিনলে কী আসে?
উত্তর : ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিকের মতে, আত্মাকে চিনলে আত্মনির্ভরতা আসে।
আমার পথ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
আমার পথ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন-১
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
আবদুল মালেক সারাটি জীবন শিক্ষকতা করেছেন, গড়েছেন আলোকিত মানুষ। অবসর গ্রহণের পর তিনি গড়ে তুলেছেন ‘তারুণ্য’ নামে সেবা-সংগঠন। বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজের পাশাপাশি পথশিশুদের শিক্ষাদান, দুর্নীতি-বিরোধী অভিযান, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করেন তিনি। অনেকে তাঁর কাজের প্রশংসা করেন আবার নিন্দা ও কটূক্তি করতেও ছাড়েন না কেউ কেউ। তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন-
‘মনেরে আজ কহ যে
ভালো মন্দ যাহাই আসুক
সত্যেরে লও সহজে।’
ক. কাজী নজরুল ইসলামের মতে কোনটি আমাদের নিষ্ক্রিয় করে দেয়?
খ. কবি নিজেকে ‘অভিশাপ রথের সারথি’ বলে অভিহিত করেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকে আবদুল মালেকের মাধ্যমে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের যে বাণী উচ্চারিত হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের কবিতাংশের বক্তব্য চেতনায় ধারণ করে আলোকিত পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব।- প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
পরনির্ভরতা আমাদের নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
খ. অনুধাবন
সমাজের অনিয়মকে ভেঙে ফেলতে কবির যে অবস্থান, তার প্রেক্ষিতে তিনি নিজেকে ‘অভিশাপ রথের সারথি’ বলে অভিহিত করেছেন।
সমাজের প্রচলিত, পুরাতন নিয়মকে ভেঙে নতুনকে প্রতিষ্ঠা করা খুব সহজ নয়। এতে প্রতিনিয়ত সমাজরক্ষকদের আক্রমণের শিকার হতে হয়, নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। এসব জেনেও কবি তাঁর বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। সকল অন্যায়, অবিচার আর অনিয়মের বিরুদ্ধে তিনি অভিশাপ হয়ে আবির্ভূত হয়েছেন। তাই তিনি নিজেকে ‘অভিশাপ রথের সারথি’ বলে অভিহিত করেছেন।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকের আবদুল মালেকের মাধ্যমে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের সত্য পথের পথিক হওয়ার বাণী উচ্চারিত হয়েছে।
নিজের অন্তরের সত্যকে যারা উপলব্ধি করতে পারে তারাই প্রকৃত মানুষ। তারা সমাজ, দেশ ও জাতির মঙ্গল প্রত্যাশী। এ প্রত্যাশা থেকেই তারা সমাজের কুসংস্কার, মিথ্যা আর ভণ্ডামির মূলোৎপাটন করতে চান। সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে চান সত্য ও মনুষ্যত্বকে।
‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বলেছেন সত্য পথের কথা। সত্য প্রকাশে তিনি নির্ভীক, অসংকোচ। সত্যের তেজেই তিনি অন্যায়কে ধ্বংস করতে চান। তিনি জাগ্রত করতে চান মনুষ্যত্ববোধকে, মানুষের মূল্যবোধকে। উদ্দীপকের আবদুল মালেকও এ সত্য পথের বাণী উচ্চারণ করেছেন, হৃদয়-সত্যের আলোতে আলোকিত হয়ে সমাজকল্যাণে এগিয়ে এসেছেন।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
উদ্দীপকের কবিতাংশের বক্তব্য চেতনায় ধারণ করে আলোকিত পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব-মন্তব্যটি সঠিক।
সত্য তার আপন দীপ্তি ও শক্তিতে ভাস্বর। সত্যের পথই জীবনের প্রকৃত পথ। সত্যের সুন্দর ও নির্মম উভয় রূপই আছে। সত্যের নির্মমতার ভয়ে মিথ্যাকে গ্রহণ করলে সে-মিথ্যাই ধ্বংস ডেকে আনে। তাই সত্য যেমনই হোক তাকে গ্রহণ করতে হবে, হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।
‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক তাঁর অন্তরের সত্যকে উন্মোচিত করেছেন। তিনি জানেন এ সত্য যত নির্মমই হোক না কেন, এ সত্যই তাঁকে পথ দেখাবে। এ সত্যের আলোতেই তাঁর হৃদয় আলোকিত হয়ে উঠবে। তিনি এটা বিশ্বাস করেন যে, সত্যের দম্ভ যাদের মধ্যে রয়েছে তারাই কেবল অসাধ্য সাধন করতে পারেন। উদ্দীপকের কবিতাংশেও এই বিষয়েরই ইঙ্গিত পাওয়া যায়। সত্য যেমনই হোক তাকে স্বীকার করার, হৃদয়ে ধারণ করার শক্তি থাকতে হবে। যাদের হৃদয় সত্যের আলোয় উদ্ভাসিত তারাই আলোকিত পৃথিবী গড়ে তুলতে পারবেন।
যারা সত্য পথের সাধক তারা সমাজে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে চান। সমাজে সত্য প্রতিষ্ঠিত হলে গোটা পৃথিবী আলোকিত হয়ে উঠবে। আর এ বিচারেই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটিকে যথার্থ বলা যায়।
আমার পথ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন-২
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
সক্রেটিস বলেছেন, ‘know thyself’; সেজন্য আত্মপরিচয় জানা ব্যক্তি সত্যের শক্তিতে ভাস্বর। সে সত্যকে দ্বিধাহীনচিত্তে হাজারবার সালাম জানাতে পারে; কিন্তু মিথ্যাকে মিথ্যার শক্তিতে বলীয়ান শয়তানকে কখনো কুর্নিশ করে না। সত্যই তার পথপ্রদর্শক। সত্যের আলোয় সে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছতে পারে। সত্য থেকে এক পা বিচ্যুত হলে সে নিজ মনুষ্যত্ব হারাবে।
ক. অতিরিক্ত বিনয় মানুষকে কী করে?
খ. মেয়েলি বিনয়ের চেয়ে অহংকারের পৌরুষ অনেক অনেক ভালো-কেন?
গ. উদ্দীপকের লেখকের ভাবনার সঙ্গে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের ভাবনার তুলনামূলক আলোচনা কর।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের চেতনাগত ঐক্য থাকলেও উদ্দীপকটি প্রবন্ধের সম্পূর্ণ ভাবার্থ নয়।”-উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
অতিরিক্ত বিনয় মানুষকে ছোট করে।
খ. অনুধাবন
নিজের সত্যকে অস্বীকার করে অতিরিক্ত বিনয় প্রদর্শন মেয়েলি বিনয়। তার থেকে আত্মবিশ্বাস ও সততার বলিষ্ঠ স্বীকৃতি প্রদর্শন করে পৌরুষকে জাহির করা, যাকে বলা যেতে পারে অহংকারের পৌরুষ, তা অনেক ভালো।
মেয়েলি বিনয় দুর্বলতার নামান্তর; তার চেয়ে নিজেকে চিনে আপনার সত্যকে আপনার গুরু, পথপ্রদর্শক কাণ্ডারি বলে জানা অনেক ভালো। কেউ কেউ এটাকে অহংকার বলে মনে করতে পারে। আত্মবিশ্বাসের স্বীকৃতি এ অহংকারকে পৌরুষের অহংকার বলাই সংগত। মেয়েলি বিনয়ের চেয়ে এ পৌরুষের অহংকার অনেক অনেক ভালো।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকের লেখকের ভাবনার সঙ্গে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের ভাবনার গভীর সাদৃশ্য রয়েছে।
মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করতে পারলে সে আপন সত্যের শক্তিতে বলীয়ান হিসেবে সমাজে উঁচু শিরে আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারে। তাকে কেউ মিথ্যার ঘোরে ফেলে বিভ্রান্ত করে স্বার্থ হাসিল করতে পারে না।
উদ্দীপকে দেখা যায়, আত্মশক্তির জাগরণ ও মিথ্যার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনের ফলে একজন মানুষ প্রকৃত মানবিক মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হতে পারে। তখন তার মধ্যে ফুটে ওঠে আত্মমর্যাদাবোধ। অন্যদিকে, ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে যথেষ্ট যুক্তি-তর্ক ও বলিষ্ঠতার সাথে মানুষের আত্মমর্যাদাবোধ জাগ্রত করে সত্যের শক্তিতে পথ চলার কথা বলা হয়েছে। মানুষ যদি তার আপন শক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করতে পারে, তাকে জগতের কোনো মিথ্যা শক্তি বা শয়তানের শক্তি পদানত করতে পারে না। এই দাবি নিয়ে সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের শয়তানি জারিজুরির মেকি খোলস উন্মোচন করাই ধূমকেতুর কাজ। তাই উদ্দীপকের লেখকের ভাবনার সঙ্গে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের ভাবনার গভীর সাদৃশ্য রয়েছে বলাই যুক্তিসংগত।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের চেতনাগত ঐক্য থাকলেও উদ্দীপকটি প্রবন্ধের সম্পূর্ণ ভাবার্থ নয়।”- উক্তিটি যথার্থতার দাবিদার।
মানুষের আপন পরিচয় পরিষ্কার হয়ে গেলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তার ফলে সে নিজেকে অসীম শক্তির বাহক বলে মনে করে; তখন তাকে মিথ্যা দিয়ে অবনত করে রাখা যায় না। এ রকম আত্মমর্যাদাশীল ব্যক্তি, সাহসী মানুষ সমাজে, দেশে, জাতিতে বৃদ্ধি পেলে ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদের মিথ্যা দেয়াল রচনা করে সত্যের আলো থেকে তাদের দূরে রাখা যায় না।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, আমরা যদি আমাদের তথা সমগ্র জাতির আত্মশক্তিকে আস্থায় আনতে পারি, সত্য-মিথ্যাকে জানতে পারি, তবে আপন আপন পরিচয় স্পষ্ট হয়ে যাবে। আত্মপরিচয় জানা ব্যক্তি সত্যের শক্তিতে ভাস্বর। সে মিথ্যাকে অভিবাদন জানায় না এবং মিথ্যার আধার শয়তানকে কুর্নিশও করে না। সত্যই তার পথপ্রদর্শক। সত্যের আলোতে সে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারে। আর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে লেখক আত্মবিশ্বাসী আত্মপ্রত্যয়ী, সত্যের মশাল তাঁর হাতে। সেই আলোয় মিথ্যার কানাগলি তাঁর চোখের সামনে পরিষ্কার। নিজেকে চিনলে, নিজের সত্যকেই কর্ণধার ভাবলে নিজের শক্তির ওপর অটুট বিশ্বাস আসে।
উদ্দীপকে আত্মবিশ্বাস ও আত্মপরিচয় জানা, সত্যকে জানা, সত্যের আলোয় আলোকিত হয়ে সত্যকে পথপ্রদর্শক করে কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। আর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে নিজকে চেনা, আত্মশক্তির আবিষ্কার, তার লক্ষ, উদ্দেশ্য, তার পথচলা সম্পর্কে প্রবন্ধকার যুক্তিনিষ্ঠ ভাষায় বলিষ্ঠ চেতনাজাগানিয়া অনুষঙ্গ তুলে ধরেছেন। আরও বলা হয়েছে, দেশের যারা শত্রু, দেশের যা কিছু মিথ্যা, ভণ্ডামি, মেকি তা সব দূর করতে ‘ধূমকেতু’ হবে আগুনের সম্মার্জনা। অসাম্প্রদায়িক চেতনা, সত্যধর্ম-প্রাণধর্ম প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে ফুটে উঠেছে। আর এসব কিছু প্রদত্ত উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ ও যৌক্তিকতার দাবিদার।
আমার পথ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন-৩
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ জনতার সামনে বঙ্গবন্ধু বলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম- জয় বাংলা!” তার এ ভাষণে জাতির মরা গাঙে যেন ভরা জোয়ার এলো। তাতে জাত-পাতের ভেদাভেদ দূর হলো। হিন্দু-মুসলমান সবাই পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে নেমে পড়ল। দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ করে ছিনিয়ে আনল লাল-সবুজের রক্তরাঙা পতাকা, স্বাধীন বাংলাদেশ।
ক. ‘আগুনের ঝাণ্ডা’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘ধূমকেতু’ হবে আগুনের সম্মার্জনা-কেন?
গ. উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের সাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের মূল সুর অভিন্ন”- উক্তিটি কতটুকু যৌক্তিক? ‘আমার পথ প্রবন্ধের আলোকে আলোচনা কর।
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
‘আগুনের ঝাণ্ডা’ শব্দটির অর্থ অগ্নি পতাকা।
খ. অনুধাবন
‘ধূমকেতু’ হবে আগুনের সম্মার্জনা-কারণ ‘ধূমকেতু’র আগুনের ঝাড়–তে মিথ্যা জাত-পাতের ভেদাভেদ, জাতীয় অন্তরায়, কুসংস্কারের জঞ্জাল জ্বলে-পুড়ে ভস্ম হয়ে যাবে।
সম্মার্জনী বা ঝাড়– দিয়ে ঘরের আঙিনার যাবতীয় ময়লা-আবর্জনা দূর করা হয়। অন্যায়, অসত্য, অসাম্য, মেকি ও ভণ্ডামিপূর্ণ পচা সমাজকে ‘ধূমকেতু’ প্রলয়ঙ্কর ধ্বংস সাধনে নতুন করে গড়বে বলে লেখক ‘ধূমকেতু’কে আগুনের সম্মার্জনী বলেছেন।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে নিবিড় সাদৃশ্য রয়েছে বলা যায়।
ব্যক্তির ক্ষেত্রে যেমন আমিত্ব শক্তিকে চিনতে পারলে বা ব্যক্তির বিকাশে যাবতীয় অন্ধকার টুটে গিয়ে আলোর ঝরনাধারা প্রবাহিত হয়, জাতীয় জীবনেও তেমনটি ঘটে থাকে। তারপর তার কাক্সিক্ষত মুক্তি বা লক্ষ্য অর্জনে সে ছুটে চলে দুর্বার দুর্নিবার গতিতে।
উদ্দীপকে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিস্মরণীয় ভাষণ কীভাবে কেমন করে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের সোনালি মোহনায় সমবেত করেছিল তার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। আর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম কলম সৈনিক হিসেবে পরাধীন ভারতের শক্তি সংগ্রামের ইশতেহার রচনা করেছেন। তাতে ফুটে উঠেছে ‘ধূমকেতু’ সম্পাদনা ও এর লক্ষ্য উদ্দেশ্য। এদিক থেকে উভয় ব্যক্তির চেতনা একই রকম। তাই বলা যায়, উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে সাদৃশ্য বিদ্যমান।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের মূল সুর অভিন্ন।”-উক্তিটি অত্যন্ত যৌক্তিক।
মানুষ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে চায়। মানুষ আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা নিয়ে স্বাধীনভাবে সমাজে অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে।
উদ্দীপকে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে ফুটে উঠেছে বাঙালি জাতির দীর্ঘ ইতিহাসে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য অদম্য চেতনার কথা। “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা।” এ ভাষণের মধ্যে রয়েছে জাতীয়তাবোধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনাদীপ্ত পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার দৃঢ় চেতনা। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এক জাতি, হিন্দু-মুসলমান কেউ আলাদা নয়। অন্যদিকে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম ‘ধূমকেতু’ পত্রিকার মধ্য দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন, মানব-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম। হিন্দু-মুসলমান মিলনের অন্তরায় বা ফাঁকি কোন খানে তা দেখিয়ে দিয়ে এর গলদ দূর করা এর অন্যতম উদ্দেশ্য।
উদ্দীপকে ‘আমার পথ, প্রবন্ধে ফুটে উঠেছে সর্বপ্রকার কুসংস্কারের মুক্তি, আত্মবিশ্বাস প্রতিষ্ঠা, মিথ্যা দূরীকরণ, ধূমকেতুর ঝাড়– দিয়ে ঝেড়ে-মুছে জাতীয় জীবনের সব-রকম গ্লানি মুক্তির আশাবাদ। তাই উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের মূল সূর অভিন্ন- উক্তিটি সঠিক ও যথার্থ।
আমার পথ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন-৪
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
আপসহীন সাংবাদিক শামসু মিয়া আল ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন, স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন, বাঙালির ওপর জাতিগত বৈষম্য দূরীকরণ ও অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে। সত্য প্রকাশের অদম্য স্পৃহা থেকেই আল-ইনসাফের সুদীর্ঘ পথ চলা।
ক. ‘ধূমকেতু’র আগুন কোন দিন নিভে যাবে?
খ. “অন্তরে যাদের এত গোলামির ভাব, তারা বাইরের গোলামি থেকে রেহাই পাবে কি করে?”-বুঝিয়ে দাও।
গ. উদ্দীপকের সাংবাদিক শামসু মিয়ার সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের কোন সাংবাদিকের মিল খুঁজে পাওয়া যায়?- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “সংবাদপত্র জাতিগঠন ও স্বাধীনতা অর্জনে বিরাট ভূমিকা রাখে।”- ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
ভুলের ওপর গোঁ ধরে যেদিন বসে থাকবে, ওই দিন ধূমকেতুর আগুন নিভে যাবে।
খ. অনুধাবন
পরাবলম্বন করে ভারতবাসীর বাঁচার মানসিকতা তাদের দাসত্বপ্রবণ ভিতু মনের পরিচয় বহন করে। তা দিয়ে নিজের মুক্তি যখন সম্ভবপর নয়, তখন সে ধরনের গোলাম শ্রেণির মানুষ দিয়ে বিদেশিদের গোলামির শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা অর্জন করা অসম্ভব।
তাই কবির বক্তব্য, যারা মানসিকভাবে গোলামিকে মেনে নিয়েছে, তারা কীভাবে বাইরের গোলামি থেকে নিজেদের মুক্ত করবে?
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকের সাংবাদিক শামসু মিয়ার সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের লেখক সাংবাদিক কাজী নজরুল ইসলামের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
আত্মশক্তিতে বলীয়ান মানুষ সত্যশক্তিতে উজ্জীবিত হয়ে যে-কাজে হাত দেয়, তা সহজেই তার দ্বারা করা সম্ভব হয়। আত্মবিশ্বাসহীন মানুষ-যার নিজের ওপর বিশ্বাস নেই, তার দ্বারা কোনো মানুষের কোনো কাজের প্রতি অটুট থাকা সহজ নয়।
উদ্দীপকের সাংবাদিক শামসু মিয়া ‘আল-ইনসাফ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা বাঙালির আত্মমর্যাদা, স্বাধিকার আন্দোলন, স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন, জাতিগত আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণ, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে আমৃত্যু লড়াই করে গেছেন নানা প্রতিক‚ল শক্তির বিরুদ্ধে। তার প্রতিষ্ঠিত আল-ইনসাফ ঐ আদর্শকে সমুন্নত রেখে সুদীর্ঘকাল পথপরিক্রমা করে চলেছে। ঠিক তেমনি মহৎ উদ্দেশ্য ও লক্ষ নিয়ে কবি, সাংবাদিক কাজী নজরুল ইসলাম জাতিগঠন ও ভারতবর্ষের স্বাধীনতা অর্জনের স্বপ্নে তাড়িত হয়ে ‘ধূমকেতু’ পত্রিকা সম্পাদনার কাজে হাত দেন। এইসব ক্ষেত্রে উভয় সাংবাদিকের চরিত্রে মিল রয়েছে বলা যায়।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“সংবাদপত্র জাতিগঠন ও স্বাধীনতা অর্জনে বিরাট ভূমিকা রাখে।”-মন্তব্যটি যথার্থ।
সমাজের লোকদের সংবাদপত্র পাঠের মাধ্যমে সমাজসচেতনতা বৃদ্ধি পায় । আমরা প্রতিদিন সকালবেলা উঠে এককাপ গরম চায়ে মুখ লাগিয়ে একটি দৈনিক পত্রিকার ওপর চোখ বুলিয়ে নিই। দেশের ও বিশ্বের খবর সংবাদপত্রের পাতাতেই বেশি করে লেখা হয়, তা থেকেই দেশের মানুষ বেশি উপকৃত হয়।
উদ্দীপকে সাংবাদিক শামসু মিয়ার ‘আল-ইনসাফ’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ ও উদ্দেশ্য বর্ণিত হয়েছে। বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশে, স্বাধীনতা আন্দোলনে, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তার বিশাল ভূমিকা রয়েছে। সমাজ গঠনে, জাতির কল্যাণ কামনায় আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন সাংবাদিক শামসু মিয়া। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে একটি সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার সামনে রেখে ইনসাফের দীর্ঘপথ চলা। একই রকম ভাবে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের লেখক, সাংবাদিক, কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘ধূমকেতু’ পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন। স্বল্পসময়ের মধ্যে বাঙালির চেতনায় নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছিল সাংবাদিক, কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত ‘ধূমকেতু’ পত্রিকা। উদ্দীপক ও প্রবন্ধে সংবাদপত্র প্রকাশের অভিন্ন লক্ষ ও উদ্দেশ্য ফুটে উঠেছে।
উদ্দীপক ও ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের পর্যালোচনা শেষে বলা যায়, সংবাদপত্র জাতিগঠন ও স্বাধীনতা অর্জনে বিরাট ভূমিকা রাখে। তাই মন্তব্যটি যথার্থ।
আমার পথ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন-৫
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
নাজমুল হক একজন সমাজসেবক। তিনি সবসময় স্পষ্ট ভাষায় কথা বলেন এবং কাউকে পরোয়া করেন না। সত্য প্রতিষ্ঠায় তিনি কুণ্ঠাবোধ করেন না। তিনি মনে করেন; সত্য কথা শুনতে খারাপ লাগলেও তা জীবনের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে।
ক. কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে কাকে সালাম-নমস্কার জানিয়েছেন?
খ. আপনার সত্যকে আপনার পথপ্রদর্শক বলে জানা অহংকার নয় কেন?
গ. উদ্দীপকে সত্যের যে চিত্র উপস্থাপিত হয়েছে তা ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. নাজমুল হকের মনোভাবই পারে সত্য-সুন্দর পৃথিবী গড়তে।-‘আমার পথ’ প্রবন্ধ অবলম্বনে উক্তিটির যৌক্তিকতা বিচার কর।
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে নিজের সত্যকে সালাম-নমস্কার জানিয়েছেন।
খ. অনুধাবন
আপনার সত্য সব অসৎ শক্তিকে পরাজিত করে পূর্ণতার পথে এগিয়ে যায় বলে তাকে পথপ্রদর্শক বলে জানা আদৌ অহংকার নয়।
আমাদের এদেশ কৃষিজ, খনিজ, জলজ-সম্পদে ভরপুর। ফলে বিদেশিরা এদেশের ওপর বার বার আক্রমণ করেছে। কিন্তু মানুষ যদি তার স্বদেশ, স্বজাতির কল্যাণ ও মুক্তির জন্য এগিয়ে আসে তাহলে তা দোষের কিছু নয়; বরং তা অহংকারের বিষয়।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকে সত্যের যে চিত্র উপস্থাপিত হয়েছে তা ‘আমার পথ’ প্রবন্ধেও প্রতিফলিত হয়েছে।
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে যে সত্যের কথা বলেছেন তা হলো মানুষের ভেতরের ঐশ্বরিক শক্তি বা অসীম ক্ষমতা। একজন মানুষ যদি সাধনার দ্বারা এই সত্যকে জানতে পারে তাহলে পৃথিবীর কোনো শক্তিই তাকে প্রতিহত করতে পারে না। চলার পথে যত বাধা-বিপত্তিই আসুক না কেন, কোনো শক্তিই তার এই পথ-চলায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে না। প্রাবন্ধিকের এই সত্যে প্রাবন্ধিককে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছে।
উদ্দীপকের নাজমুল হক ও প্রাবন্ধিক এই সত্যেরই পূজারি ছিলেন। তিনি সবসময় স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতেন। আর তার এই স্পষ্টবাদিতাই হলো তার ভেতরগত সত্য। এই সত্যের গুণেই তিনি একজন সমাজসেবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তাই উদ্দীপকে যে সত্য উপস্থাপিত হয়েছে তা হলো চিরকল্যাণকর, মঙ্গল ও সমাজের জন্য হিতকর। আর এ সত্যই ‘আমার পথ’ প্রবন্ধেরও মূল প্রতিপাদ্য।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
‘নাজমুল হকের মনোভাবই পারে সত্য-সুন্দর পৃথিবী গড়তে’।-উদ্দীপকের এ উক্তিটি যৌক্তিক।
স্পষ্টবাদিতা মানুষের অন্যতম ঐশ্বরিক ক্ষমতা। এই ক্ষমতা অর্জন করতে পারলে কোনো বাধা-বিপত্তিই তার চলার পথকে আটকাতে পারে না। যারা এই গুণে গুণান্বিত তারা সামনে এগিয়ে যান এবং এই অগ্রবর্তী পথিকের দ্বারা সমাজের কল্যাণ হয়। সমাজ থেকে দূর হয় সকল অন্যায়-অবিচার, অত্যাচার আর বৈষম্য।
‘আমার পথ’ প্রবন্ধে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন বিদেশি শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য মানুষের সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি দরকার তা হলো আপন সত্যকে চেনা ও এর স্বরূপ উপলব্ধি করা। উদ্দীপকের নাজমুল হকও এই সত্যের দিশারী। তিনি একজন সমাজসেবক। তিনি মনে করেন সত্য কথা যতই অপ্রিয় হোক না কেন তা সমাজ ও সমাজের মানুষের জন্য মঙ্গলজনক। সমাজ সংস্কার করতে গিয়ে যদি মিথ্যার বেড়াজালে আবদ্ধ হয় তাহলে নাজমুল হক ঘুনে ধরা এ সমাজকে পরিবর্তন করতে পারবেন না। তিনি মনে করেন সত্যই, সুন্দর আর এ মনোভাবই পারে একজন মানুষকে আলোর পথ দেখাতে।
অতএব, সমাজের যারা অগ্রপথিক, যাদের দ্বারা সমাজ তথা রাষ্ট্র পরিচালিত হয় সে সব কর্ণধারকে বিদেশির দাসত্ব না করে নিজের দেশের কথা ভেবে নিজ ক্ষমতার বলেই দেশ পরিচালনা করতে হবে।
আমার পথ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন-৬
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
যারা ঘরের পাশে পাহাড়ের অজগর, বনের বাঘ নিয়ে বসবাস করে, তারা আজ নীরবে বিদেশির দাসত্ব করে। শুনে ভীষণ ক্রোধে হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে ওঠে। সারা দেহমনে আসে প্রলয়ের কম্পন, সারা বক্ষ মন্থন করে আসে অশ্রু।
ক. বেশি বিনয় দেখাতে গিয়ে অনেক সময় কোনটি ঘটে?
খ. পরাবলম্বন কেন আমাদের নিষ্ক্রিয় করে তোলে?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের বৈসাদৃশ্য প্রমাণ কর।
ঘ. “সারা দেহমনে আসে প্রলয়ের কম্পন”- উক্তিটি ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
বেশি বিনয় দেখাতে গিয়ে অনেক সময় নিজের সত্যকে অস্বীকার করে ফেলা হয়।
খ. অনুধাবন
পরাবলম্বনতা মানুষের সঞ্জীবনী শক্তি ও আত্মশক্তি ক্রমান্বয়ে বিনষ্ট করে ফেলে। নিজের সত্তাকে বিকিয়ে অন্যের গলগ্রহ হয়ে থাকলে মানুষ ধীরে ধীরে অলস ও কর্মবিমুখ হয়ে পড়ে। তার নিজের যে একটা অলৌকিক শক্তি আছে তা বিকাশে বাধাপ্রাপ্ত হয়। তখন মানুষ অন্যের দানে, দয়ায়, দাক্ষিণ্যে বেঁচে থাকে।
পুরাতন-জরাজীর্ণ ধ্যান-ধারণা আর মিথ্যাকে সে আঁকড়ে ধরে কোনো রকমে বেঁচে থাকে। আসলে এ বাঁচায় কোনো কৃতিত্ব নেই।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকের সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের যথেষ্ট অমিল লক্ষ করা যায়।
বাঙালি ভুলে গেছে তাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির কথা, ভুলে গেছে তাঁদের আসল পরিচয়। তারা যে জ্বলে-পুড়ে মরবার জন্য প্রস্তুত কিন্তু মাথা নোয়াবার নয়, তা যেন আজ ভাবাও অবান্তর। দিনের পর দিন তাঁর সন্তানেরা মুখ বুজে সহ্য করছে বিদেশিদের পরাধীনতার শৃঙ্খল।
উদ্দীপকে বর্ণিত বাঙালি একদিন ঘরের পাশে পাহাড়ের অজগর, বনের বাঘ নিয়ে বাস করেছে তারাই আজ নীরব, বিদেশির দাসত্ব করছে। আর এর জন্য বাঙালির আলস্য ও কর্মবিমুখতা দায়ী। এই দাসত্বের জন্য বাঙালি আজ সকলের চেয়ে ঘৃণ্য। শুনে ভীষণ ক্রোধে হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে আসে, সারা দেহমনে প্রলয়ের কম্পন আসে, সারা বুক বেয়ে অশ্রু নামে। কিন্তু ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বলেছেন, মানুষের ভেতরে যে ঐশ্বরিক ক্ষমতা আছে তা যদি সে উপলব্ধি করে তাহলে ঐ ক্ষমতার বলে সে তার সামনের সমস্ত বাধা-বিপত্তি, প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারবে। প্রাবন্ধিক বলেছেন, যার অন্তরে ভয়, সে নিজেকে যেমন ভয় পায় তেমনি বাইরের সবকিছুতেই তার ভয়। যার মনে মিথ্যা সে নিজেকেও ভয় পায়। এখানেই প্রবন্ধের অমিল।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
বাঙালিরা নীরবে বিদেশিদের দাসত্ব করে বলেই সারা দেহমনে প্রলয়ের কম্পন আসে।
বাঙালি যে সাহসী জাতি তা ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়। বাঙালি শুধু লাঠি দিয়েই তার স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে চেষ্টা করেছে। বাংলার তরুণরাই স্বাধীনতার জন্য অসম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে, যা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত আছে। কিন্তু সেই বাঙালিরা আজ পরদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে।
উদ্দীপকে লক্ষণীয়, বাঙালি দিনের পর দিন পৃথিবীর লোককে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতো, সেই আজ সকলের দ্বারে ভিখারি। বাঙালিরা ঘরের পাশে পাহাড়ের অজগর আর বনের বাঘ নিয়ে বাস করলেও নীরবে বিদেশিদের দাসত্ব করছে। আর এ জন্যই ভীষণ ক্রোধে প্রাবন্ধিকের হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে ওঠে, দেহমনে আসে প্রলয়ের কম্পন। প্রাবন্ধিক বলেছেন, বাঙালি তার নিজের সত্যকে ভালোভাবে চেনে না বলেই তার অন্তরে ঢুকে আছে ভয়, এই ভয়ের জন্য সে নিজের অধিকার সম্পর্কে অজ্ঞ। এই নিষ্ক্রিয়তা তাকে সত্যের পথ থেকে মিথ্যা নামক কুসংস্কারাচ্ছন্ন অন্ধকার পথে নিয়ে গেছে। আত্মাকে চিনলেই আত্মনির্ভরতা আসে অর্থাৎ নিজের ওপর নিজের ভরসা আসে। তাই প্রাবন্ধিক বলেছেন, পরনির্ভরতা পরিহার করে নিজের শক্তি ও সামর্থ্যরে ওপর প্রতিষ্ঠিত হলেই কেবল স্বাবলম্বী হওয়া যাবে।
আলোচনার দ্বারপ্রান্তে এসে বলা যায়, মানুষ বাইরে যতই গোঁয়ার্তুমি বা স্বাধীন হওয়ার কথা মুখে বলুক না কেন, সে যতক্ষণ পর্যন্ত তার ভেতরের গলদ দূর করতে না পারবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে পরাধীনই থাকবে। তাই অন্তরের দাসত্ব দূর করে নিজের ওপর দণ্ডায়মান হয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার কথা ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম ফুটিয়ে তুলেছেন।
আমার পথ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন-৭
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
আজকাল শিক্ষিত বেকারদের মাঝে পরনির্ভরশীলতা বাড়ছে। তারা এর ওপর অটল বিধায় এ সংখ্যাটি কমানো সম্ভবপর নয়। কিন্তু নিজের সম্পর্কে জানলে তারা আর এ সমস্যার সম্মুখীন হতো না। পরের দিকে চেয়ে থাকার জন্য তাদের মন আজ মানসিক দাসত্বে পরিণত হচ্ছে। এ দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে না আসলে জাতীয় জীবনে মুক্তি সম্ভব নয়।
ক. বাংলাদেশের জাতীয় কবি কে?
খ.নিজেকে চিনলে আর কাউকে চিনতে বাকি থাকে না। প্রাবন্ধিকের এ মতামতটি বুঝিয়ে লেখ।
গ.উদ্দীপকটি ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ.“উদ্দীপকের শিক্ষিত বেকারদের মানসিক দাসত্ব পরিবর্তনে প্রয়োজন আত্মনির্ভরতা”-‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
খ. অনুধাবন
মানুষ যদি তার নিজ সত্তাকে চিনতে পারে অর্থাৎ নিজ দেশের সংস্কৃতি ও ধর্মবোধ জাগ্রত করে তাহলে বাইরের কোনো অপশক্তিই তাদের গ্রাস করতে পারে না।
এদেশের মানুষের মতো জ্ঞানশক্তি ও প্রেমশক্তি পৃথিবীর আর অন্য কোনো জাতির মধ্যে নেই। এদেশের মানুষ শত শত বছর ধরে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ধর্মবোধ জাগ্রত রেখে বসবাস করছে। নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য ও সোনার বাংলাকে স্বকীয় করার জন্য আত্মোৎসর্গ করতে তারা পিছপা হয়নি। তাই প্রাবন্ধিক বলেছেন, নিজেদের সংস্কৃতি, সভ্যতা, ঐশ্বর্য, ধর্মবোধ সম্পর্কে সচেতন থাকলে অন্যরা এদেশের সম্পদ লুট করতে পারত না।
গ. প্রয়োগ
আমি মনে করি উদ্দীপকটি ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। কারণ উদ্দীপকে যে পরনির্ভরশীলতা ও মানসিক দাসত্বের কথা বলা হয়েছে তা ‘আমার পথ’ প্রবন্ধেও ফুটে উঠেছে।
পরনির্ভরশীলতা মানুষকে অমানুষ করে তোলে, মানুষকে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হতে বাধা সৃষ্টি করে, তাঁকে নি®প্রাণ পুতুলের মতো করে পরের আজ্ঞাবাহী দাসে পরিণত করে। বহুকাল ধরে আমাদের সমাজের মানুষের অন্তরের উচ্চবৃত্তিগুলো বিনাশ হওয়ায় তাদের মস্তিষ্ক ও হৃদয় অন্যের দাস হয়ে পড়েছে।
উদ্দীপকে আমরা লক্ষ করি, আজকাল আমাদের দেশের শিক্ষিত বেকাররা পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। কিন্তু তাদের এ পরনির্ভরশীলতার প্রধান কারণ নিজের সম্পর্কে অচেতন হওয়া। প্রত্যেক মানুষের মাঝেই সুপ্ত প্রতিভা আছে কিন্তু মানুষ আত্মশক্তি দ্বারা তা বিকশিত করে না। যার ফলে পরের দিকে চেয়ে থেকে মনটাও দাসে পরিণত হয়েছে। ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক এ পরনির্ভশীলতা ও দাসত্বপনার কথা তুলে ধরেছেন। কিন্তু অলস ও কর্মবিমুখ মানুষ তা না করে ধীরে ধীরে পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যে-বাঙালি একদিন সারা পৃথিবীর লোককে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াত আজ তারা পথের ভিখারি। আর এ হীন অবস্থার জন্য লেখক তাদের আলস্যকে দায়ী করেছেন। সুতরাং পরনির্ভরতা ও দাসত্বপনার দিক থেকে উদ্দীপকের সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি অবশ্যই সঙ্গতিপূর্ণ।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“উদ্দীপকের শিক্ষিত বেকারদের মানসিক দাসত্ব পরিবর্তনে প্রয়োজন আত্মনির্ভরতা।”-প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।
উদ্দীপকে শিক্ষিত যুবক বেকারদের পরনির্ভরশীলতার একমাত্র কারণ নিজ সম্পর্কে সচেতনতা। নিজের ভেতরের প্রতিভাকে জ্ঞানের দ্বারা উদ্ভাসিত করা। আলস্য ও কর্মবিমুখতা পদে পদে তাদের দাসত্বেকে পরিণত করেছে আর অন্যের দিকে চেয়ে থাকার জন্য তারা আত্মনির্ভরশীল হতে পারছে না।
প্রাবন্ধিকের মতে, নিজেকে চিনলে নিজের সত্যকেই কর্ণধার মনে করে নিজের শক্তির ওপর অটুট বিশ্বাস জন্মে। এ বিশ্বাস থেকেই তার মধ্যে স্বাবলম্বিতা আসে। এ স্বাবলম্বিতাই পারে মানুষকে পরনির্ভরশীলতা থেকে দূরে রাখতে। আত্মনির্ভরতা যেদিন বাঙালির মাঝে প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিনই বাঙালি পরনির্ভরশীলতার গ্লানি থেকে মুক্তি পাবে।
অতএব, আত্মাকে চিনে, নিজের সত্যকে জেনে, নিজের শক্তিতে বলীয়ান হওয়ার যে দম্ভ, এই দম্ভই শির উঁচু করে। তাই উদ্দীপকের শিক্ষিত বেকারদের মানসিক দাসত্ব পরিবর্তনে প্রয়োজন আত্মনির্ভরতা-এ উক্তিটি যৌক্তিক।
আমার পথ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন-৮
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
মুসলমানদের সাহিত্য-সংস্কৃতিতে বলীয়ান করতে ১৯২৬ সালে বাংলায় ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ গড়ে ওঠে। এখান থেকে ‘শিখা’ নামের একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। যেখানে স্লোগান ছিল ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব’। সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা বলবৎ থাকা একান্ত কাম্য।
ক. কী থাকলে মানুষের ধর্মের বৈষম্যের ভাব থাকে না?
খ. প্রাবন্ধিকের মতে, এদেশের নতুন জাত গড়ে উঠবে না কেন?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের অমিলগুলো দেখাও।
ঘ. “জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব”- উক্তিটির আলোকে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি বিশ্লেষণ কর।
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. জ্ঞান
কাজী নজরুল ইসলামের মতে, কেউ নিজের ধর্ম চিনলে সে অন্যের ধর্ম ঘৃণা করতে পারে না।
খ. অনুধাবন
প্রাবন্ধিকের মতে, এদেশের ধ্বংস না হলে নতুন জাত গড়ে উঠবে না।
প্রাবন্ধিক মনে করেন, আমাদের মাতৃভূমি পৃথিবীর স্বর্গ। অতি প্রাচুর্য আমাদের বিলাসী, ভোগী করে শেষে অলস-বিমুখ জাতিতে পরিণত করেছে। আমাদের ঐশ্বর্য শত বিদেশি লুটে নিয়ে যায়, আমরা তার প্রতিবাদ তো করি না, উল্টো তাদের দাসত্ব করি- এ লুণ্ঠনে তাদের সাহায্য করি।
গ. প্রয়োগ
উদ্দীপকের সাথে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের অনেক বিষয়েই অমিল লক্ষ করা যায়।
জ্ঞান সকল প্রকার অজ্ঞতা অন্ধকার দূর করে মানুষকে আলোর পথে নিয়ে যায়। নতুনের স্বপ্ন ও সম্ভাবনা তাদের প্রেরণা জোগায়। কিন্তু যারা ভীরু, কাপুরুষ তারা জ্ঞানের আলো উদ্ভাবনে ভয় পায়, শঙ্কিত হয়। অন্ধকারের সাথেই তাদের সখ্য গড়ে ওঠে।
উদ্দীপকে সমগ্র জনগোষ্ঠীর কথা ফুটে ওঠেনি, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ আরো জাতি-উপজাতি আছে, যা উপেক্ষিত হয়েছে। শুধু সমাজের একটি অংশ মুসলমানদেরকে সাহিত্য-সংস্কৃতিতে উদারমনা ও সচেতনভাবে অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক অখণ্ড বাঙালির কথা তুলে ধরেছেন। উদ্দীপকে যেমন সাহিত্যে-সংস্কৃতিতে উদারমনা ও সচেতনভাবে অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে, সেখানে প্রবন্ধে নজরুল বাঙালিদের সত্যের পথে চলার কথা বলেছেন, আর এ সত্যের পথ হলো আলো ও জ্ঞানের পথ। উদ্দীপকে যে ‘শিখা’ পত্রিকার কথা বলা হয়েছে তা ছিল একটি সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা। পক্ষান্তরে, ‘আমার পথ’ প্রবন্ধে যে-পত্রিকার উলেখ আছে তা হলো ‘ধূমকেতু’। ‘ধূমকেতু’ ছিল বিদ্রোহাত্মক একটি পত্রিকা। ‘শিখা’ পত্রিকার স্লোগান ছিল ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।” পক্ষান্তরে ‘ধূমকেতু’ ছিল আগুনের সমার্জ্জনা। যে-আগুনের শিখায় দেশের যারা শত্রু, যা কিছু মিথ্যা, ভণ্ডামি-মেকি তা দূর হবে। সুতরাং একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, উদ্দীপকের সাথে প্রবন্ধের ক্রিয়াকলাপ ও অখণ্ডতার দিক থেকে অমিল লক্ষ করা যায়।
ঘ. উচ্চতর দক্ষতা
“জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।”- প্রশ্নোক্ত উক্তিটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
মানুষ যখন আলো ও অন্ধকারকে সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারে না তখন মরীচিকার পেছনে ছোটে। জ্ঞানের আলো থেকে আসে কল্যাণ, মহত্ত্ব, সমৃদ্ধি ও জয়ের প্রেরণা। অন্যদিকে অজ্ঞতা থেকে আসে অশান্তি, হতাশা, ব্যর্থতা ও অমানিশার হাতছানি। উদ্দীপকে যে-জ্ঞানের কথা বলা হয়েছে তাকে জীবন-দর্শনের আলো হিসেবে অভিহিত করা হয়। তাই আলো যেখানে স্বল্প-সেখানে জ্ঞানের পরিধিও ক্ষীণ। আর মুক্তিও সেখানে অসম্ভব।
‘আমার পথ’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক যে-সত্যের কথা বলেছেন তা হলো জ্ঞান বা আলো। এই জ্ঞান মানুষের মাঝে উদ্ভাসিত হলে তার চলার পথে কোনো বাধা-বিপত্তি আসলে সে অনায়াসে তা পরাহত করতে পারে। এ সত্যের পথ অতি সহজ নয়, বড়ই কণ্টকাকীর্ণ। এই পথেই মানুষ তার সকল বিভ্রান্তি ও অন্ধকার দূর করে পায় মুক্তির স্বাদ। কিন্তু মুক্তির জন্য হয় সাহসী; পথে যদি কোনো লোকলজ্জার ভয়, রাষ্ট্রের ভয় তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে তাহলে এই পথ চলায় বাঁধার সৃষ্টি হবে। প্রাবন্ধিক স্পষ্টই বলেছেন, সত্য হলো পূর্ণতার প্রতীক। এই পথের পথিকরা ভীরুদের কথা বিশ্বাস করে না। তারা আশায় বুক বেঁধে অন্ধকার ফেলে আলোর পথে এগোয়।
অতএব, উদ্দীপকে যে-প্রাণের কথা বলা হয়েছে সেই জ্ঞান যদি মানুষের অন্তরে সম্পূর্ণ প্রস্ফুটিত না হয়, তাহলে সেখানে ভালো কিছু আশা করা যায় না। সুতরাং প্রশ্নোক্ত উক্তিতে যে সত্য ফুটে উঠেছে ‘আমার পথ’ প্রবন্ধের আলোকে তা অবশ্যই যৌক্তিক।