নবম-দশম শ্রেণীর রসায়ন জৈব যৌগ প্রশ্ন উত্তর
দশম শ্রেণির জৈব যৌগের রসায়ন কোশ্চেন অ্যানসার
১. কে সর্বপ্রথম প্রমাণ করেন যে জৈব যৌগের প্রধান উপাদান কার্বন?
উত্তর: বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিয়ে 1784 খ্রিস্টাব্দে প্রমাণ করেন।
২. পরীক্ষাগারে সর্বপ্রথম কে , কোন জৈব পদার্থ প্রস্তুত করেন?
উত্তর: বিজ্ঞানী ভোল্হার অ্যামোনিয়া সায়ানেট থেকে পরীক্ষাগারে সর্বপ্রথম ইউরিয়া প্রস্তুত করেন।
৩. কোন বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম পরীক্ষাগারে অ্যাসিটিক অ্যাসিড প্রস্তুত করে দেখান?
উত্তর: বিজ্ঞানী কোলবে।
৪. জৈব যৌগ কি ?
উত্তর: কার্বনের অক্সাইড, ধাতব কার্বনেট ও বাই কার্বনেট, ধাতব সায়ানাইড ও হাইড্রোজেন সায়ানাইড বাদে কার্বন দ্বারা গঠিত যে যৌগ গুলির মধ্যে কার্বনের ক্যাটিনেশন ধর্ম , সমাবয়বতা প্রভৃতি বৈশিষ্ট্য গুলি থাকে তাদের জৈব যৌগ বলে।
৫. জৈব রসায়ন কাকে বলে?
উত্তর: রসায়ন বিজ্ঞানের যে শাখায় জৈব যৌগ ও তার বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে জৈব রসায়ন বলে।
৬. জৈব ও অজৈব যৌগের মধ্যে তিনটি পার্থক্য লেখ।
জৈব যৌগ | অজৈব যৌগ |
১. প্রত্যেকটি জৈব যৌগতে কার্বন পরমাণু থাকবেই। | ১. অজৈব যৌগ গুলিতে কার্বনের মতো নির্দিষ্ট কোন মৌল থাকে না। |
২. জৈব যৌগ সাধারণত জলে অদ্রবণীয় কিন্তু জৈব দ্রাবক যেমন অ্যালকোহল ,বেনজিন ইত্যাদিতে দ্রবণীয়। | ২. অজৈব যৌগ গুলি সাধারণত জৈব দ্রাবকে অদ্রাব্য। |
৩. প্রায় সমস্ত জৈব যৌগ দাহ্য প্রকৃতির হয়। | ৩. বেশিরভাগ অজৈব যৌগ অদাহ্য। |
৭. জৈব যৌগের মূল উপাদান কি?
উত্তর: কার্বন হলো জৈব যৌগের মূল উপাদান।
৮. কার্বনের যোজ্যতা সর্বদা _____।
উত্তর: কার্বনের যোজ্যতা সর্বদা 4
৯. কার্বন যোজ্যতার চতুস্তলকীয় মতবাদ এর প্রবক্তা কে?
উত্তর: বিজ্ঞানী ভ্যান্ট হফ ও লা-বেল।
১০. মিথেন অনুর প্রতিটি H-C-H কোণের মান কত?
উত্তর: 109°28′
১১. ক্যাটিনেশন ধর্ম কাকে বলে?
উত্তর: কার্বন পরমাণু গুলি পরস্পরের সঙ্গে এক বন্ধন বন্ধন বা স্ত্রী বন্ধন দ্বারা যুক্ত হয়ে বড় কার্বন শৃংখল গঠন করতে সক্ষম হয়। কার্বন পরমাণুর এই ধর্মকে ক্যাটিনেশন ধর্ম বলে।
১২. হাইড্রোকার্বন কাকে বলে? হাইড্রোকার্বন কয় প্রকার ও কি কি?
উত্তর: কার্বন এবং হাইড্রোজেন এর সমন্বয়ে গঠিত যৌগকে হাইড্রোকার্বন বলে।
▣ হাইড্রোকার্বন দুই প্রকার। যথা:-
সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন ও অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।
১৩. সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন কাকে বলে উদাহরণ দাও।
উত্তর: কার্বন ও হাইড্রোজেন দ্বারা গঠিত যে যৌগে কার্বন পরমাণু গুলি পরস্পরের সাথে সমযোজী বন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে তাকে সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বা অ্যালকেন বলে।
যেমন ইথেন (C2H6), (C4H10)
১৪. অ্যালকেনের সাধারণ সংকেত কি?
উত্তর: অ্যালকেনের সাধারণ সংকেত হলো CnH2n+2
১৫. চিত্র এর মাধ্যমে ইথেন এর গঠন দেখাও এবং লেখ এটি সম্পৃক্ত না অসম্পৃক্ততা হাইড্রোকার্বন।
▣ ইথেন অনুর কার্বন পরমাণু গুলি পরস্পরের সঙ্গে সমযোজী এক বন্ধন দ্বারা যুক্ত তাই ইথেন হল সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন।
১৬. অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন কাকে বলে?
উত্তর: যেসব হাইড্রোকার্বন যৌগের অণুতে কমপক্ষে দুটি কার্বন পরমাণু পরস্পরের সঙ্গে সমযোজী দ্বিবন্ধন কিংবা ত্রিবন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকে, তাদেরকে অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন বলে।
১৭. অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন কয় প্রকার ও কি কি?
উত্তর: অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন দুই প্রকার। যথা: অ্যালকিন ও অ্যালকাইন।
১৮. অ্যালকিন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: দ্বিবন্ধন যুক্ত অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন কে অ্যালকিন বলে। যেমন ইথিলিন ( C2H4)
১৯. অ্যালকেনের সাধারণ সংকেত কি?
উত্তর: CnH2n
২০. অ্যালকাইন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: ত্রিবন্ধন যুক্ত অসম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন কে অ্যালকাইন বলে। যেমন : অ্যাসিটিলিন ( C2H2)
২১. অ্যালকাইনের সাধারণ সংকেত কি?
উত্তর: অ্যালকাইনের সাধারণ সংকেত হলো C2H2
২২. হাইড্রোকার্বন মূলক কাকে বলে?
উত্তর: হাইড্রোকার্বন থেকে এক বা একাধিক হাইড্রোজেন পরমাণু অপসারিত হয়ে কার্বন এবং হাইড্রোজেন ঘটিত যে পরমাণু জোট পাওয়া যায় যা রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সাধারণত অপরিবর্তিত থাকে তাকে হাইড্রোকার্বন মূলক বা জৈব মূলক বলে। যেমন মিথেন (CH4) থেকে একটি হাইড্রোজেন পরমাণু অপসারিত হয়ে মিথাইল ( -CH3) উৎপন্ন হয়।
২৩. কার্যকরী মূলক কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যেসব সক্রিয় পরমাণু পরমানু পুঞ্জো জৈব যৌগের গঠন এ উপস্থিত থেকে তাদের প্রকৃতি, ধর্ম এবং রাসায়নিক বিশিষ্টতা নির্ধারণ করে তাদের কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ বলে। যেমন – হাইড্রোক্সিল ( -OH) , কার্বক্সিল ( -COOH)
২৪. ফেনলে উপস্থিত কার্যকরী মূলকের নাম ও সংকেত লেখ।
উত্তর: হাইড্রোক্সিল ( -OH)
২৫. অ্যাসিটিক অ্যাসিডে উপস্থিত কার্যকরী মূলকের নাম ও সংকেত লেখ।
উত্তর: কার্বক্সিল ( -COOH)
২৬. অ্যাসিটোন উপস্থিত কার্যকরী মূলকের নাম ও সংকেত লেখ।
উত্তর: কিটো ( -CO)
২৭. সমাবয়বতা কাকে বলে? সমাবয়বতা কয় প্রকার ও কি কি?
উত্তর: একই আণবিক সংকেত বিশিষ্ট কিন্তু ভিন্ন আণবিক গঠন ও ধর্ম বিশিষ্ট যৌগ গুলিকে সমবয়বী যৌগ বলে এবং এই ঘটনাকে সমবায়তা বলে।
সমাবয়বতা দুই প্রকার। যথা: গঠনমূলক সমাবয়বতা ও ত্রিমাত্রিক সমাবয়বতা।
২৮. গঠনমূলক সমবায়তা কাকে বলে? একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: জৈব যৌগের পরমাণুগুলির আণবিক গঠন এর ভিন্নতার জন্য যে সমবয়বতার সৃষ্টি হয় তাকে গঠনমূলক সমবয়বতা বলে। CH3CH2OH এবং CH3-O-CH3 যৌগ দুটির আণবিক সংকেত একই কিন্তু কার্যকরী মূলক ভিন্ন হওয়ায় সমবয়বতা সৃষ্টি হয়েছে।
২৯. কার্যকরী মূলক ঘটিত সমবয়বগুলির রাসায়নিক ধর্ম ভিন্ন হয় কেন?
সমবায় গুলির আণবিক সংকেত এক হলেও তাদের গঠন সংকেত আলাদা হওয়ায় তাদের রাসায়নিক ধর্ম আলাদা হয়। যেমন অ্যালকোহল এর তুলনায় ইথার নিষ্ক্রিয় পদার্থ।
৩০. নিচের কোনটি আলাদা: মিথেন ,প্রোপেন, ইথানল, বিউটেন?
উত্তর: ইথানল । ( কারণ বাকি সবগুলো অ্যালকেন সমগনীয় শ্রেণীর অন্তর্গত)
৩১. IUPAC এর সম্পূর্ণ কথা কি?
উত্তর: ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ পিওর এন্ড অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি।
৩২. IUPAC নামকরণের নিয়ম গুলি লেখ।
উত্তর: Click here for Full answer
৩৩. ফল পাকাতে কোন জৈব যৌগ ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: ইথিলিন ( C2H4)
৩৪. কার্বাইড বাতিতে কোন গ্যাস জ্বালানি রূপে ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: অ্যাসিটিলিন গ্যাস ( C2H2)
৩৫. এলপিজি (LPG) এর প্রধান উপাদান কি?
উত্তর: এলপিজি (LPG) এর প্রধান উপাদান হলো বিউটেন।
৩৬. সিএনজি (CNG) এর প্রধান উপাদান কি?
উত্তর: সিএনজি (CNG) এর প্রধান উপাদান হলো মিথেন।
৩৭. ইথিলেনে সঙ্গে হাইড্রোজেনের যুত বিক্রিয়ায় কি ঘটে বিক্রিয়াসহ দেখাও
উত্তর: 250 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় নিকেল চূর্নের ওপর দিয়ে ইথিলিন ও হাইড্রোজেন এর মিশ্রণ চালনা করলে ইথেন উৎপন্ন হয়।
H2C=CH2 + H2 → H3C-CH3 ( ইথেন )
( শর্তঃ – Ni অনুঘটক / 250°C তাপমাত্রা )
৩৮. ইথিলিনের পলিমার এর নাম কি?
উত্তর: পলিথিন
৩৯. ব্রোমিন এর সঙ্গে ইথিলিনের যুত বিক্রিয়ায় কি ঘটে বিক্রিয়াসহ লেখ।
উত্তর: ক্লোরোফর্মের রবিনকে দ্রবীভূত করে তার মধ্য দিয়ে ইথিলিন গ্যাস চালনা করলে বর্ণহীন ইথিলিন ডাই ব্রোমাইড উৎপন্ন হয়।
H2C=CH2 +Br2 → BrH2C + CH2Br ( ইথিলিন ডাই ব্রোমাইড)
৪০. একটি জৈব যৌগের নাম লেখ যা গ্যাসীয় হলেও তার পলিমার কঠিন পদার্থ।
উত্তর: ইথিলিন গ্যাসীয় পদার্থ কিন্তু পলিথিন কঠিন পদার্থ।
৪১. ব্রোমিন এর সঙ্গে অ্যাসিটিলিন এর যুত বিক্রিয়ায় কি ঘটে বিক্রিয়াসহ লেখ।
অথবা, কিভাবে প্রমান করবে অ্যাসিটিলিন একটি অসম্পৃক্ত যৌগ?
উত্তর: ব্রোমিন এর সঙ্গে অ্যাসিটিলিন এর বিক্রিয়ায় প্রথমে বর্ণহীন ডাইক্লোরো মিথেন উৎপন্ন হয় ডাইব্রোমো ইথিলিন উৎপন্ন হয়। এই বিক্রিয়া প্রমাণ করে যে অ্যাসিটিলিন একটি অসম্পৃক্ত যৌগ।
৪২. নিচের কোনটি সংশ্লেষিত পলিমার নয়?
উত্তর: পলিথিন, PVC, টেরিলিন, সেলুলোজ
উত্তর: সেলুলোজ।
৪৩. একটি বায়ো-ডিগ্রেডেবল পলিমারের উদাহরণ দাও।
উত্তর: সেলুলোজ।
৪৪. Non-biodegradable পলিমারের দুটি ক্ষতিকর প্রভাব লেখ।
উত্তর: নন বায়োডিগ্রেডেবল পলিমার গুলির নাম গুলি স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর ভিনাইল ক্লোরাইড, স্টাইরিন ইত্যাদি।
নন বায়োডিগ্রেডেবল পলিমার গুলি পরিবেশে মাটির সঙ্গে মিশে যায় না ফলে মাটি দূষণ হয়।
৪৫. ইথাইল অ্যালকোহল এর দুটি ব্যবহার লেখ।
পেট্রোল একসঙ্গে মিশিয়ে মোটরে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
মেথিলেটেড স্পিরিট প্রস্তুত করতে ব্যবহার করা হয়।
৪৬. ভিনিগারে শতকরা কত শতাংশ অ্যাসিটিক অ্যাসিড থাকে?
অথবা, ভিনেগার কাকে বলে।
উত্তর: অ্যাসিটিক অ্যাসিডের 4% – 8% লঘু জলীয় দ্রবণকে ভিনেগার বলে।
৪৭. ইথাইল অ্যালকোহল এর সঙ্গে অ্যাসিটিক এসিডের বিক্রিয়া সমীকরণ সহ লেখ।
উত্তর: গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিডের উপস্থিতিতে ইথাইল অ্যালকোহল এর সঙ্গে অ্যাসিটিক এসিডের বিক্রিয়ায় ইথাইল অ্যাসিটেট এস্টার উৎপন্ন হয়।
CH 3COOH + C2H5OH → ( গাঢ় H 2SO4) CH3COO C2H5 + H2O
৪৮. ডিনেচার্ড স্পিরিট কি? এর ব্যবহার লেখ।
উত্তর: মিথাইল অ্যালকোহল মিশ্রিত ইথাইল অ্যালকোহল কে ডিনেচার্ড স্পিরিট বলে।
শিল্পে বিশেষ করে বার্নিশের কাজে উত্তম দ্রাবক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।