এইচএসসি বাংলা আমি কিংবদন্তির কথা বলছি কবিতার প্রশ্ন উত্তর

0
667

এইচএসসি বাংলা আমি কিংবদন্তির কথা

বলছি কবিতার প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্ন-১. আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ কবে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তর : আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ১৯৩৪ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।

প্রশ্ন-২. ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতাটির রচয়িতা কে?

উত্তর : ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতাটির রচয়িতা আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ।

প্রশ্ন-৩. ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত?

উত্তর : ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতাটি গদ্যছন্দে রচিত।

প্রশ্ন-৪. ‘কিংবদন্তি’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তর : ‘কিংবদন্তি’ শব্দের অর্থ জনশ্রুতি।

প্রশ্ন-৫. ‘কিংবদন্তি’ শব্দবন্ধটি কীসের প্রতীক?

উত্তর : ‘কিংবদন্তি’ শব্দবন্ধটি ঐতিহ্যের প্রতীক।

প্রশ্ন-৬. কে কবি এবং কবিতার কথা বলতেন?

উত্তর : কবির পূর্বপুরুষ কবি এবং কবিতার কথা বলতেন।

প্রশ্ন-৭. প্রবহমান নদী কাকে পুরস্কৃত করে?

উত্তর : যে মৎস্য লালন করে তাকে প্রবাহমান নদী পুরস্কৃত করে।

প্রশ্ন-৮. জননীর আশীর্বাদ কাকে দীর্ঘায়ু করবে?

উত্তর : যে গাভির পরিচর্যা করে জননীর আশীর্বাদ তাকে দীর্ঘায়ু করবে।

প্রশ্ন-৯. ‘অভিনবত্ব’ কী নির্মাণের শর্ত?

উত্তর : ‘অভিনবত্ব’ চিত্রকল্প নির্মাণের শর্ত।

প্রশ্ন-১০. ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় বর্ণিত পলিমাটিতে কী ছিল?

উত্তর : ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় বর্ণিত পলিমাটিতে সৌরভ ছিল।

প্রশ্ন-১১. কে নদীতে ভেসে থাকতে পারে না?

উত্তর : যে কবিতা শুনতে জানে না সে নদীতে ভেসে থাকতে পারে না।

প্রশ্ন-১২. কবি পূর্বপুরুষদের মতো কোন কথা বলার প্রত্যাশা করেছেন?

উত্তর : কবি পূর্বপুরুষদের মতো স্বাধীনতার কথা বলার চেষ্টা করেছেন।

প্রশ্ন-১৩. আমাদের সন্তানেরা কোথায় শুয়ে ঐতিহ্যের গল্প শোনে?

উত্তর : আমাদের সন্তানেরা মায়ের কোলে শুয়ে ঐতিহ্যের গল্প শোনে।

প্রশ্ন-১৪. কর্ষিত জমির কোনটি কবিতা?

উত্তর : কর্ষিত জমির প্রতিটি শস্যদানা কবিতা।

প্রশ্ন-১৫. ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় কারা মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে?

উত্তর : ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় মায়ের ছেলেরা মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

প্রশ্ন-১৬. কবিতা না শোনা মানুষ হৃৎপিণ্ডে কী ধরে রাখতে পারে না?

উত্তর : কবিতা না শোনা মানুষ হৃৎপিণ্ডে সূর্যকে ধরে রাখতে পারে না।

প্রশ্ন-১৭. কবির পূর্বপুরুষেরা অন্যের অধীনে কীভাবে জীবন ধারণ করতেন?

উত্তর : কবির পূর্বপুরুষেরা অন্যের অধীনে ক্রীতদাসের মতো জীবন ধারণ করতেন।

প্রশ্ন-১৮. ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় পূর্বপুরুষরা কোন ধরনের জমি আবাদের কথা বলতেন?

উত্তর : ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় পূর্বপুরুষরা পতিত জমি আবাদের কথা বলতেন।

প্রশ্ন-১৯. ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় পূর্বপুরুষেরা কোন পাহাড়ের কথা বলতেন?

উত্তর : ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় পূর্বপুরুষেরা অতিক্রান্ত পাহাড়ের কথা বলতেন।

প্রশ্ন-২০. জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি শব্দ কী?

উত্তর : জিহ্বায় উচ্চারিত প্রতিটি শব্দ কবিতা।

প্রশ্ন-২১. কবিতায় প্রবহমান নদী কাকে ভাসিয়ে রাখে?

উত্তর : কবিতায় প্রবহমান নদী ‘যে সাঁতার জানে না’ তাকে ভাসিয়ে রাখে।

প্রশ্ন-২২. কার পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল?

উত্তর : কবির পূর্বপুরুষের পিঠে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল।

প্রশ্ন-২৩. কবি কার মৃত্যুর কথা বলেছেন?

উত্তর : কবি তাঁর গর্ভবতী বোনের মৃত্যুর কথা বলেছেন।

প্রশ্ন-২৪. কবির প্রত্যাশিত মুক্তির প্রতীক কী?

উত্তর : কবির প্রত্যাশিত মুক্তির প্রতীক কবিতা।

প্রশ্ন-২৫. কবির কণ্ঠে উচ্চারিত সত্য কীসের মতো?

উত্তর : কবির কণ্ঠে উচ্চারিত সত্য স্বপ্নের মতো।

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি

মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি

মোরা নতুন একটি কবিতা লিখতে যুদ্ধ করি

মোরা নতুন একটি গানের জন্য যুদ্ধ করি

মোরা একখানা ভালো ছবির জন্য যুদ্ধ করি

মোরা সারা বিশ্বের শান্তি বাঁচাতে আজকে লড়ি

ক. প্রবহমান নদী কাকে ভাসিয়ে রাখে?

খ. ‘ভালোবাসা দিলে মা মরে যায়’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

গ. ‘উনোনের আগুনে আলোকিত একটি উজ্জ্বল জানালার কথার’ সাথে উদ্দীপকের চেতনার ঐক্য নির্দেশ কর।

ঘ. উক্ত ঐক্যের প্রেক্ষাপট উপস্থাপনে কবি আবু জাফর ওবায়দুল­হ “আমি কিংবদন্তির কথা বলছি” কবিতায় অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছেন মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর।

১ নং প্রশ্নের উত্তর

উত্তরঃ-ক প্রবহমান নদী যে সাঁতার জানে না তাকেও ভাসিয়ে রাখে।

উত্তরঃ-খ “ভালোবাসা দিলে মা মরে যায়” বলতে বোঝানো হয়েছে পরিবারকে ভালোবেসে পরিবারের গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকতে মাতৃভূমির ওপর নেমে আসে নির্মমতা।

মা ও মাতৃভূমি একইসূত্রে গ্রথিত। মাকে ভালোবেসে পরিবারের গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকলে দেশরক্ষা হয় না। দেশকে শত্র“র আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে হলে মায়া, ভালোবাসার বন্ধনকে ছিন্ন করে শত্র“র বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়। আর তা হলে দেশমাতার ভাগ্যে নির্ধারিত হয় মৃত্যু।

উত্তরঃ-গ ‘উনোনের আগুনে আলোকিত একটি উজ্জ্বল জানালার কথার’ সাথে উদ্দীপকের ঐক্য হলো মুক্ত জীবনের প্রত্যাশার চেতনা।

প্রতিটি মানুষই মুক্ত, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার প্রয়াসী। পরাধীনতা কারোরই কাম্য নয়। স্বাধীনতা, মুক্ত জীবনের প্রত্যাশায় মানুষ সকল ভুল-ভ্রান্তি, দুঃখ-বেদনাকে মুছে ফেলতে চায়, ভেঙে-গুঁড়িয়ে দিতে চায় সকল অপশক্তিকে। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় এবং উদ্দীপকে এ বিষয়টির প্রতিফলন ঘটেছে।

আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় ‘উনোনের আগুনে আলোকিত ‘একটি উজ্জ্বল জানালার কথা’ এ চরণের মধ্য দিয়ে মুক্ত জীবনের আকাক্সক্ষা ব্যক্ত হয়েছে। আগুন সবকিছুকে শুচি-শুদ্ধ করে তোলে। আগুনের উত্তাপেই মুছে যাবে মানুষের জীবনের সকল গ্লানি। মানুষ দেখা পাবে এক মুক্ত জীবনের। উদ্দীপকেও একটি নতুন দিনের সূচনা, মুক্ত জীবনের কথা বলা হয়েছে। আর এ কারণেই মানুষ অস্ত্র ধারণ করে যুদ্ধ করে।

উত্তরঃ-ঘ উক্ত ঐক্যের প্রেক্ষাপটে কবি আবু জাফর ওবায়দুল­াহ ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছেন-মন্তব্যটি সত্য।

পরাধীন সে মানুষই হোক আর জাতিই হোক সে নির্জীব। এ ভাবে বেঁচে থাকা মৃত্যুরই নামান্তর। যেখানে স্বাধীনতা নেই সেখানে বেঁচে থাকার আনন্দও নেই। তাই প্রত্যেকে মুক্ত ও স্বাধীন জীবনের প্রত্যাশী। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতা এবং উদ্দীপকে এ বিষয়টিই ফুটে উঠেছে।

‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় কবি মানবমুক্তির আকাক্সক্ষা করছেন। এ আকক্সক্ষা থেকেই এ কবিতায় তিনি মুক্তির প্রতীকরূপে ‘কবিতা’ শব্দটিকে ব্যবহার করেছেন। কবি বার বার ‘কবিতা’ শব্দটিকে ব্যবহার করে মুক্তির আবেগকে শিল্পরূপ দিয়েছেন। এ মুক্তির পূর্বশর্ত হলো সংগ্রাম, যুদ্ধ বা বাঙালির রক্তের মধ্যেই আছে। উদ্দীপকেও আমরা এই মুক্ত জীবনচেতনারই প্রতিফলন লক্ষ করি। এ মুক্ত জীবনকে পেতে হলে যুদ্ধ করতে হয়।

‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় মুক্ত জীবন প্রত্যাশার প্রেক্ষাপট হলো বাঙালি পুর্বপুরুষদের লড়াই করে টিকে থাকার ইতিহাস। আর এটি এ কবিতায় উপস্থাপন করে কবি অসাধারণ শিল্প-সফলতা দেখিয়েছেন।

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

বিদেশের অপরিচিত পরিবেশে একাকি মিজান সাহেব তার মাকে খুব অনুভব করেন। বিশেষ করে ছোটবেলায় মায়ের কোলে শুয়ে গল্প, কবিতা ও ছড়া শোনার স্মৃতি তাকে খুব আলোড়িত করে।

ক. যে কবিতা শুনতে জানে না সে কোথায় ভাসতে পারে না?

খ. কে মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শুনতে পারে না? কেন?

গ. উদ্দীপকে ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে?-আলোচনা কর।

ঘ. মায়ের কোলে শুয়ে গল্প, কবিতা ও ছড়া শোনার স্মৃতি তাকে খুব আলোড়িত করে। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার আলোকে উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।

উত্তরঃ-ক যে কবিতা শুনতে জানে না, সে নদীতে ভাসতে পারে না।

যে কবিতা শুনতে জানে না, সে মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শুনতে পারে না-কারণ কবিতা শোনার ক্ষমতা না থাকলে মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শোনার মানসিকতাও থাকে না।

উত্তরঃ-খ মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শোনা যেকোনো মানুষের জীবনের অন্যতম আনন্দের দিক। মূলত মাতৃ-হৃদয়ের আবেগ যাকে টানে না, সে মায়ের গল্পকে ভালোবাসে না, মায়ের কোলের আকর্ষণ অনুভব করে না। যে কবিতা শুনতে জানে না, তার হৃদয় আবেগহীন জড় পদার্থের মতো, এ কারণেই কবিতাহীন মানসিকতার মানুষ মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শুনতে পারে না।

উত্তরঃ-গ ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার কবি তাঁর মায়ের মুখে গল্প শোনার যে কথা বলেছেন, তার সাথে উদ্দীপকের মিজানের স্মৃতিকাতরতার সাদৃশ্য রয়েছে।

মা সকলের জীবনেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন মানুষ। মানুষের শৈশব ও কৈশোর মায়ের সাথে জড়িয়ে থাকে এবং এ স্মৃতি মানুষ কখনোই ভুলতে পারে না। মায়ের মমতামাখা স্মৃতি মানুষকে সবসময় অনুপ্রাণিত করে।

উদ্দীপকের মিজান সাহেব বিদেশে থাকেন। সেখানে তাঁর মনে পড়ে মায়ের কথা। ছোটবেলায় কোলে শুয়ে শুয়ে তিনি গল্প, কবিতা শুনতেন। সেসব আজ তাঁর স্মৃতিতে জীবন্ত হয়ে ওঠে। এ স্মৃতির কথা ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতাতেও পাওয়া যায়। কবি তাঁর মায়ের মুখে অনেক শুনতেন প্রবহমান নদীর কথা এবং অন্যান্য অনেক গল্প, অর্থাৎ আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় এ দিকটিই উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে।

উত্তরঃ-ঘ “মায়ের কোলে শুয়ে গল্প, কবিতা ও ছড়া শোনার স্মৃতি তাকে খুব আলোড়িত করে”-উক্তিটি ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার আলোকে তাৎপর্য বহন করে।

শৈশব ও কৈশোরে মানুষ মায়ের আদরে বড় হয়। জীবনের প্রাথমিক শিক্ষাও মানুষ মায়ের কাছে পায়। মা বিভিন্ন কবিতা, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি দিয়ে সন্তানের মনে মানবতাকে জাগিয়ে তোলেন।

উদ্দীপকে প্রবাসী মিজান সাহেবের কথা বিধৃত হয়েছে। মিজান সাহেব তাঁর শৈশব ও কৈশোরের কথা ভাবেন। তাঁর মায়ের কাছে শোনা গল্প, কবিতা, ছড়া- এসব তাঁর কানে বেজে ওঠে, মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার মধ্যেও কবি এরূপ স্মৃতিচারণ করেছেন। মায়ের গল্প শোনাকে কবিতাপ্রেমী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায়। কবির মতে, যে কবিতা শুনতে জানে না, সে মায়ের কোলে শুয়ে গল্প শুনতে জানে না। যেহেতু কবি এবং উদ্দীপকের মিজান সাহেব দুজনেই মায়ের কাছে গল্প শোনার স্মৃতিকে তুলে ধরেছেন, সেহেতু বলা যায় হাসান সাহেবও কবিতা শোনার মানসিকতা রাখেন।

মিজান সাহেবের মনে কবিতার প্রতি ভালোবাসা আছে। সেই ভালোবাসা থেকেই তিনি সময়ের কাছে শোনা গল্পের স্মৃতিতে আলোড়িত হন। এর দ্বারাই প্রমাণিত হয়, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার আলোকে তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে।

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ছোট ভাইটিকে আমি আর কোথাও দেখি না

নোলক-পরা বোনটিকে কোথাও দেখি না

কেবল উৎসব দেখি, পতাকা দেখি।\

ক. কবি কার মৃত্যুর কথা বলেছেন?

খ. ‘আমি বিচলিত স্নেহের কথা বলছি’-এখানে ‘বিচলিত স্নেহ’ বলতে কী বোঝায়?

গ. উদ্দীপকে ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার কোন অনুষঙ্গটি প্রতিফলিত হয়েছে ব্যাখ্যা দাও।

ঘ. ‘যুদ্ধ মানে স্বজন হারানোর কান্না’-উদ্দীপক ও ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।

৩নং প্রশ্নের উত্তর

উত্তরঃ-ক কবি তাঁর গর্ভবতী বোনের মৃত্যুর কথা বলেছেন।

উত্তরঃ-খ ‘আমি বিচলিত স্নেহের কথা বলছি’-এখানে ‘বিচলিত স্নেহ’ বলতে আপনজনের উৎকণ্ঠাকে বোঝানো হয়েছে।

কেউ সামান্য বিপদে পড়লে আপনজনের উৎকণ্ঠার শেষ থাকে না, কবি সেই উৎকণ্ঠাকে স্মরণ করেন, যা তাঁর মা, বাবা, ভাই, বোনের মধ্যে অসংখ্যবার প্রকাশ পেয়েছে। এখন তারা কেউ নেই। কিন্তু তাদের সেই বিচলিত স্নেহ কবিকে আবেগতাড়িত করে। ‘বিচলিত স্নেহ’ বলতে এটাই বোঝানো হয়েছে।

উত্তরঃ-গ ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় স্বজন হারানোর যে বিষয়টি রয়েছে, সেটাই উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে।

১৯৭১ সালে আমরা পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবতীর্ণ হই। যে যুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। প্রায় দুই লক্ষ মা-বোনের জীবনে নেমে এসেছে অসহনীয় অপমান আর মৃত্যু।

উদ্দীপকের কবি মুক্তিযুদ্ধে তাঁর স্বজনকে হারিয়েছেন। তাঁর যে ভাইটি যুদ্ধে গেছে, তাঁকে আর কোথাও পাওয়া যায় না। নোলক-পরা বোনও পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। কবি শুধু উৎসব আর স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে পেয়েছেন লাল সবুজের পতাকা। ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার কবিও ভাই আর বোন হারানোর বেদনা প্রকাশ করেছেন। কবির গর্ভবতী বোন মারা গেছে। ভাই যুদ্ধ করেছেন মহান স্বাধীনতা অর্জনের জন্য। অর্থাৎ, ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার এ দিকটাই উদ্দীপকে প্রকাশ পেয়েছে।

উত্তরঃ-ঘ ‘যুদ্ধ মানে স্বজন হারানোর কান্না’উক্তিটি উদ্দীপক ও ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করা যুক্তিযুক্ত।

ন্যায় আর অন্যায় এ দুইয়ের মধ্যে যখন দ্ব›দ্ব লাগে, তখন শুরু হয় যুদ্ধ। যুদ্ধ মানে মত আর মৌলিক চাহিদা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণপণ সংগ্রাম করা। এ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেমন হারানোর বেদনা আসে তেমনি পাওয়া যায় বিজয়ের মাধ্যমে অধিকার প্রতিষ্ঠার দলিল।

উদ্দীপকের কবি তাঁর স্বজনদের মুক্তিযুদ্ধে হারিয়েছেন। যুদ্ধের পরে তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে অনাবিল বিজয়ের উৎসব দেখেছেন। কিন্তু আপন ভাই আর বোনকে কোথাও খুঁজে পাননি। তারা যুুদ্ধে মারা গেছে। এই স্বজন হারানোর প্রবল যন্ত্রণা ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতাতেও পাওয়া যায়। কবি যুদ্ধে তাঁর ভাই আর বোনকে হারিয়ে শোকাতুর। যুদ্ধ মানুষের জন্য ভালো ও খারাপ, দুই-ই বয়ে আনে। যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি মহান স্বাধীনতা। কিন্তু এ যুদ্ধই কেড়ে নিয়েছে অসংখ্য প্রাণ।

উদ্দীপকের কবি হারিয়েছেন আপন ভাই আর বোনকে। এই হারানোর সুর ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’ কবিতায় কবির কণ্ঠেও একই হাহাকারে প্রকাশ পেয়েছে। তাই বলা যায় যে, ‘যুদ্ধ আনে স্বজন হারানোর কান্না’ উক্তিটি যথার্থ হয়েছে।